নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বুধবার। রাত ১২:৪১। ২ জুলাই, ২০২৫।

কারো নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন : আইন উপদেষ্টা

জুন ১২, ২০২৫ ৮:১৭
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, কারো নিন্দা করার আগে তার সম্পর্কে একটু জেনে নিন।

ড. আসিফ নজরুল তার ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে নিন্দা শিরোনামে এক পোস্টে বলেছেন, ‘যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এরমধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনো বহন করতে চাইবেন না।’

আমাদের সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে যেকোনো বিষয়ে নিন্দা-সমালোচনা করার প্রবণতা আছে। এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা কয়েক দিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন-বিষয়ক ভুল সংবাদের জেরে সমালোচনার উদাহরণ টানেন। তিনি পোস্টে বলেছেন, ‘এমন মানুষ আছে সমাজে, যারা এমন না। তাদের কাছে অনুরোধ, কারো নিন্দা করার আগে তার সম্পর্কে একটু জেনে নিন।’

বুধবার রাতে ড. আসিফ নজরুল এর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘নিন্দা’ শিরোনামে দেওয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

-‘নিন্দা’-

১.কয়েকদিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন বিষয়ক ভুল সংবাদের জেরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এই ঝড়ের অন্যতম শিকার হয় আমার পরিবারের সদস্যরা। দু’একজন তাদের ধিক্কার দিতে থাকে। কীভাবে এই আইন করলাম আমি! তারা বলে, এটা তো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় করেছে! কিন্তু সমালোচকরা নাছোড়বান্দা! না, আইনটিতে তো লেখা আছে আইন মন্ত্রণালয়ের নাম।

আরও পড়ুনঃ  তানোরে পানিতে ডুবে মৃগী রোগে আক্রান্ত যুবকের মৃত্যু

আমি জানি, এরকম বহু শিক্ষিত মানুষ আছে সমাজে। তাদের কাছে সবিনয়ে বলি, অন্য যে কোনো মন্ত্রণালয় যে অধ্যাদেশই করুক না কেন, তা জারি করতে হয় আইন মন্ত্রণালয়কে। আমাদের রুলস্ অব বিজনেস অনুসারে এটাই বিধান। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে এটাই হয়। বাংলাদেশে এনবিআর নিয়ে যে আইনটা (অধ্যাদেশ) হয়েছে, তা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ার পর এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে। সরকারী কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিয়ে যে আইন, তাও করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে।

অধ্যাদেশ আকারে যত আইন অতীতে হয়েছে সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় জারি করেছে। ভবিষ্যতে যেসব অধ্যাদেশ হবে সেগুলোও আইন মন্ত্রণালয়কে জারি করতে হবে। এজন্য গেজেটের প্রথম পাতায় আইন মন্ত্রণালয়ের নামই থাকবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আইন মন্ত্রণালয় আইনগুলো করেছে বা এটি আইনগুলোর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৭ বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে সরকার

আইন মন্ত্রণালয় নিজস্ব উদ্যোগে আইন করেছে কেবল এ মন্ত্রণালয়ের কার্য পরিধিভুক্ত বিষয়ে। যেমন, দেওয়ানি কার্যবিধির সংশোধনী আইন বা উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইনটি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের কোনো ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। আছে শুধু জারি করার দায়িত্ব। এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা।

২.আইন তো তবু কিছুটা খটমটে বিষয়। কিন্তু সাদামাটা, সহজবোধ্য যে কোনো বিষয়েও আমাকে নিন্দা করার প্রবণতা আছে সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের যে কোনো কাজের সমালোচনা যদি আমাকে করা হয়, তাহলে যে কোনো ভালো কাজের প্রশংসাও আমাকে কেন করা হয় না?

সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে বিদেশে গেলেন এই দায় যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দেওয়া হয়, তাহলে দ্রব্যমূল্য যে স্থির রয়েছে এই প্রশংসাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দিতে হবে। কিন্তু এর কোনটিই আসলে করা ঠিক নয়।

আরও পড়ুনঃ  তানোরে ভুতুড়ে বিল দেয়ার প্রতিবাদে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে  গ্রাহকদের বিক্ষোভ 

আমার কাজের জন্য নিন্দা/প্রশংসা আমাকে করবেন, অন্যর কাজের জন্য অন্যকে। যে কোনো কাজের সামগ্রিক দায়দায়িত্ব আমাদের গোটা সরকারের। কিন্তু যদি নির্দিষ্টভাবে একজন উপদেষ্টাকে দায়ী করা হয় তাহলে সেটি শুধু তার মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিষয়ে করা উচিত।

৩.যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এরমধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনও বহন করতে চাইবেন না। এটি মনে রাখা ভালো।

আমি জানি ‘অপরের মুখ ম্লান করে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই’- এমন মানুষ আছে সমাজে। যারা এমন না, তাদের কাছে অনুরোধ, কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন।

আল্লাহ আছেন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে।-বাসস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।