অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বলেছেন, এখন আমাদের প্রথম কাজ হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। এজন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক। সংসদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথাগুলো বলতে পারবে, যা এখন কেউ বলতে পারছে না।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি আলমাস সিনেমার সামনে বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশ শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিলটি আলমাস সিনেমার সামনে থেকে শুরু হয়ে কাজীর দেউড়ি, জুবলী রোড়, এনায়েত বাজার, তিনি পুলের মাথা হয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনকে বাধা দেওয়া মানে গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করা। বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা বন্ধ করা এবং আগামীতে মানুষের রাজনৈতিক সংবিধানিক অধিকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। সুতরাং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজকে দক্ষিণ এশিয়াতে বিএনপি সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এটার কারণ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেশপ্রেম, উন্নয়নের উদ্যোগ। শহীদ জিয়া বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের চিন্তা চেতনায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় দিয়েছিলেন। তা পরে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্টমুক্ত এবং স্বৈরাচারমুক্ত দেশে আবার সেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে আমাদের নেতা তারেক রহমান।
দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার বিষয়ে আমীর খসরু বলেন, দেশের মানুষের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ধরনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি যদি দায়িত্ব পায়, দেশের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পকেট থেকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। দেশের মানুষের শিক্ষা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই স্লোগানটি শুধুমাত্র রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ নয়, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে আগামী বাংলাদেশে অর্থনীতিতে উন্নয়নের সহযোগিতা করতে পারে, অংশগ্রহণ করতে পারে, নিজেদের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করতে পারে, এটাই হবে আগামী বাংলাদেশ, তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি দেশের অর্থনীতি ও পরিকল্পনার বিষয়ে বলেন, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এছাড়া, আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে কামার-কুমার থেকে শুরু করে যারা কাজ করছে, তাদের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে ইনশাল্লাহ। বাড়িতে বসে পণ্য তৈরি করে বিদেশি রপ্তানি করার ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শেয়ার বাজার, ব্যাংকিং-সহ সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সবাই যাতে এই সুযোগ পায়, সবাই যাতে ব্যবসা এবং চাকরিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের হৃদয় জানে, আজকে বাংলাদেশে ধানের শীষের জোয়ার শুরু হয়েছে। এই জোয়ারকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তারা ভেসে যাবে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। দেশের মানুষ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করতে পারবে। এখন কেউ যদি মনে করে তারা নির্বাচিত হতে পারবে না, সেজন্য নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, সেটা তাদের সমস্যা, এটা বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা নয়। সুতরাং বার্তা পরিষ্কার, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সব জনগণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদেরকে গ্রামে-গঞ্জে যেতে হবে, তারেক রহমানের নির্দেশিত খালকাটা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। প্রত্যেক এলাকার খালগুলো কেটে পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হবে। সবকিছু সমাধান হবে ইনশাল্লাহ। তারেক রহমান ৩০ কোটি গাছ লাগাবেন। সবাই মিলে আগামী বাংলাদেশ করতে হবে। নেতা নয়, সবার অবদান থাকতে হবে। এজন্য রাজনীতির সাথে সাথে আমরা অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রের কথাও বলছি।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।