স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্র ও বিস্ফোরকসহ গ্রেপ্তার মোস্তাসেরুল আলম অনিন্দ্য (৩৩) এবং তার দুই সহযোগী মো. রবিন (২৮) ও মো. ফয়সালের (৩০) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে নগরের বোয়ালিয়া থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি দায়ের করেন উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নতুন এ মামলাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এখনও অন্য কোনো মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। রোববার দুপুরের মধ্যেই তাদের আদালতে হাজির করা হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বোয়ালিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানিয়েছেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
গ্রেপ্তার অনিন্দ্য হলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শফিউল আলম লাট্টুর ছেলে। সম্পর্কে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই। নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকায় নিজ বাড়ির পাশেই ‘ডক্টর ইংলিশ’ নামে একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করতেন তিনি।
শনিবার ভোররাত থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে এ কোচিং সেন্টারে অভিযান চালায়। এসময় অনিন্দ্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান থেকে উদ্ধার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সামরিক মানের দূরবীন, জিপিএস, স্নাইপার স্কোপ, দেশীয় অস্ত্র, বিদেশি ধারালো ডেগার, উন্নতমানের ওয়াকিটকি সেট, টিজার গান, অব্যবহৃত সিমকার্ড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, কম্পিউটার, দেশি-বিদেশি মদ ও নাইট্রোজেন কার্টিজ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ড এবং একই বছরের জুলাই মাসে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে অনিন্দ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। তবে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি ওই দুটি মামলা থেকে রেহাই পান।
এ দুটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি শরিফুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অনিন্দ্যের সহপাঠী ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর শরিফুল জানিয়েছিলেন, অনিন্দ্যের মাধ্যমেই তিনি আনসার-আল ইসলামে যোগ দেন। অনিন্দ্য ছিলেন তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।