স্টাফ রির্পোটার : করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কার্যকর ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত সংক্রমণ রোধে মাস্কের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় মাস্কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিতে সরকারের নির্দেশনাও আছে। কিন্তু এরপরও রাজশাহীতে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক পরতে অনীহা দেখা যাচ্ছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) নগরীর ২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়ে দেখা গেছে, নগরীর প্রায় ৬৬ শতাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নাই। যারা মাস্ক ব্যবহার করছেন তাদের অনেকেই সঠিক নিয়ম মেনে মাস্ক পরছেন না। কেউ কেউ মাস্ক নাকের নিচে নামিয়ে চলাফেরা করছেন।
শুক্রবার বিকেল ৪ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত নগরীর রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, ৫ হাজার ৪৫০ জন মানুষের মধ্যে ২ হাজার ২৫০ জন মাস্ক ব্যবহার করেছেন। এবং দুপুর ২ টা ৪০ মিনিট থেকে ৩ টা ৪০ পর্যন্ত কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় অবস্থান নিয়ে দেখা যায়, ৪ হাজার ৬৫৩ জনের মধ্যে ১ হাজার ১৩৪ জন মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেছেন। মাস্ক পরিধানে পথচারীদের মাঝে সচেতনতা দেখা গেলেও যাত্রী ও রাস্তার পাশে থাকা দোকানিদের মাঝে অনীহা দেখা গেছে। দোকানগুলোতে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ লেখা থাকলেও অধিকাংশই দোকানেই ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ মাস্ক ব্যবহার করছেন না।
নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি জানান, করোনার কারণে দোকানগুলোতে নো মাস্ক, নো সার্ভিস লেখা সংবলিত ব্যানার টাঙ্গাতে বলা হয়েছে। এ কারণে আমরা এ ব্যানার টাঙিয়েছি। তবে আমরা চেষ্টা করি সবসময় মাস্ক ব্যবহার করতে। কিন্তু সব সময় মাস্ক পরে থাকতে অস্বস্তি বোধ হয়। যার কারণে মাঝে মাঝে খুলে রাখি।
অটোরিকশা চালক সজিবুল হাসান জানান, তিনি অধিকাংশই সময় মাস্ক পরে গাড়ি চালান। কিন্তু সবসময় তো এটা পরে থাকা যায় না। যার কারণে কিছু সময় খুলে রাখি। আর যাত্রীরা তাদের ইচ্ছেমতো মাস্ক পরে; খুলে রাখে। এ বিষয়ে আমরা কী করতে পারি! এটাতো তাদের বিষয়।
এদিকে, নগরীতে পৃথক সময়ে দুই রঙের অটো চলাচল শুরু হওয়ায় কাশিয়াডাঙ্গা থেকে গোদাগাড়ি ও কাঁকনহাটগামী অটো ও সিএনজিগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। অনেক সময় বাধ্য হয়েই গাদাগাদি করে যেতে হচ্ছে বলছেন যাত্রীরা।
যাত্রী রিমন আলী জানান, তিনি শহরে একটি দোকানে কাজ করেন। তার বাসায় ফিরতে রাত হয়। কাশিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত গাড়িতে যাতায়াতে তেমন কোনো সমস্য হয় না। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহ থেকে কাশিয়াডাঙ্গা থেকে তার বাসা পর্যন্ত একসঙ্গে গাদাগাদি করে যেতে হচ্ছে। এ সময় অনেকেই মাস্ক পরে না। এতে ঝুঁকিতো থাকছেই!
এ বিষয়ে রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হক বলেন, করোনার দ্বিতীয় ধাপ বা ঢেউ যা-ই বলি, সংক্রমণ এড়াতে সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে সচেতন করা হচ্ছে। বাধ্যতামূলক মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিতে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্নভাবে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। মাস্ক পরতে মানুষকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি জরিমানাও করা হচ্ছে। এজন্য জেলা প্রশাসনের নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাও করা হচ্ছে। এছাড়াও মসজিদে ইমামদের মাধ্যমেও মাস্ক পরার জন্য বলা হচ্ছে। জনসমাগম ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সচেতনার পাশাপাশি মাস্ক বিতরণ ও জরিমানা করা হচ্ছে।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার
প্রধান কার্যালয় : বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী।
মেইল: newssomoyerkotha@gmail.com , editorsomoyerkotha@gmail.com মোবাইল : ০১৮১৭-১২২২৪৩