নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা ৭:০৫। ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫।

নেপালে শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় সেনাবাহিনী, অন্তর্বর্তী নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫ ৯:১৬
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার জেরে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে দুই দিনে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত ও ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সহিংসতায় সরকার পতনের পর সেনাবাহিনী রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে।

তবে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে টানাপোড়েন। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম হিমালয়ান টাইমস।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাঠমান্ডুতে বুধবার সেনারা সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। টানা দুই দিনের সহিংস বিক্ষোভে সরকার পতনের পর শহরে সেনা মোতায়েন করা হয়। আন্দোলনকারীরা সরকারি ভবনে আগুন দেওয়ায় এ পদক্ষেপ নেয় সেনারা।

এদিকে বুধবার বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি দল সেনা সদর দপ্তরে গিয়ে অন্তর্বর্তী নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা করেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ জনপ্রিয় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে প্রস্তাব করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সৌজন্য সাক্ষাত

এর আগে গত সোমবার ফেসবুক, এক্স ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বল্পমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর হাজারো তরুণ-তরুণী বিক্ষোভে নামেন। পুলিশ গুলি চালালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। মঙ্গলবার সরকারি স্থাপনাগুলোতে হামলার পর সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নেয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ এবং আহত ৬৩৩ জনে।

মঙ্গলবার এ সহিংসতার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল তাকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দায়িত্ব নিতে বলেন। কিন্তু ওলি সরকারি বাসভবন ছেড়ে চলে যান। তার অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি রেহান রাজ দঙ্গল জানিয়েছেন, তারা সেনা কর্তৃপক্ষকে সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  সাব্বির-নাসিরকে রেখে রাজশাহী-রংপুরের দল ঘোষণা

২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নেপালের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ছিলেন সুশীলা কার্কি। এ পদে দায়িত্ব নেওয়া একমাত্র নারী তিনি এবং তখন থেকেই জনপ্রিয় ছিলেন। তবে সেনা সদর দপ্তরের বাইরে জড়ো হওয়া কিছু আন্দোলনকারী তার প্রার্থিতার বিরোধিতা করেছেন।

সেনারা বুধবার কাঠমান্ডুর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পাহারা দিয়েছে। এসময় গাড়ি ও বহু মানুষকে তল্লাশি করা হয় এবং সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলেও সেনারা প্রথমে ব্যারাকেই ছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে তাদের মোতায়েন শুরু হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিশ্রুতির কথা জানায়।

এছাড়া বুধবার শহরের প্রধান কারাগারে বন্দিদের দমনেও সেনারা অংশ নেয়। কয়েদিরা প্রহরীদের পরাস্ত করে আগুন ধরিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে সেনারা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পালানোদের আটক করে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি।

আরও পড়ুনঃ  ১৬ দলীয় “বেনাপোল বাজার ফুটবল টুর্ণামেন্ট”২৫ এর কোয়াটার ফাইনালে ১ম ম্যাচ অনুষ্ঠিত

মূলত ‘জেনারেশন জি’র বিক্ষোভ’ নামে পরিচিত এই আন্দোলন শুরু হয় সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর। সরকার বলেছিল, এসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ও সরকারি তত্ত্বাবধানে আসেনি।

মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। কারণ পুলিশি গুলিতে ১৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। পাশাপাশি আন্দোলনে তরুণদের নানা অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে। তারা বলছে, রাজনৈতিক নেতাদের সন্তানরা বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হলেও সাধারণ যুবকদের কর্মসংস্থানের তীব্র সংকট রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে নেপালে তরুণদের বেকারত্বের হার ছিল প্রায় ২০ শতাংশ। সরকারি হিসাব বলছে, প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি যুবক জীবিকার সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।