নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার। রাত ২:২১। ২ অক্টোবর, ২০২৫।

পবায় পাইপ লাইন বসানো নিয়ে মারামারিতে আহত ৬

অক্টোবর ১, ২০২৫ ১০:০৮
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানাধীন ডাংগিপাড়া এলাকার ‘আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ মাদ্রাসা সংলগ্ন জমিতে পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য পাইপ লাইন বসানোকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে মহিলাসহ মোট ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতরা রামেক হাসপাতালের আট নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বুধবার সকালে এঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, রফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, সেরাজুল ইসলাম, মেরাজ উদ্দিন, নূর সালেহ ও সাজেদা বেগম। আহতরা রক্তাক্ত অবস্থায় আরএমপির শাহমখদুম থানায় মামলা করতে গেলে ডিউটি অফিসার আহতদের প্রথমে হাসপাতালে চিকিৎসা নেবার পরামর্শ দেন এবং তারপর মামলা করতে বলেন বলে জানান আহতরা। দেশিয় অস্ত্র ও লাঁঠিসোটা দিয়ে তাদের মারধর করা হয়। আহত পাঁচজনকেই আঘাত করা হয়েছে মাথায় ও বুকে। আর মহিলাকে আঘাত করা হয়েছে পায়ে ও শরীরের একাধিক স্থানে। উভয়পক্ষের আহতরাই চিকিৎসা নিচ্ছেন রামেকের আট নম্বর ওয়ার্ডে। সংশ্লিষ্ট থানায় উভয়পক্ষের মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

আহত রফিুকল, নজরুল, সেরাজুল, মেরাজ ও নূর সালেহ জানান, ডাংগিপাড়া এলাকার মাদ্রাসার ম্যানেজার ফরিদের অনুমতি সাপেক্ষে মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ঘেষে পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য মাটির নিচ দিয়ে পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য তারা কাজ করছিলেন। নতুন বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশনের বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীরের বাইরে দিয়ে সেই পাইপ লাইন বসানোর সিদ্ধান্ত গত মঙ্গলবার সকলের উপস্থিতিতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযুক্ত সাজ্জাদ তাদের কাজে বাঁধাপ্রদান করেন। সাজ্জাদ ঐ মাদ্রাসার নাইট গার্ডের চাকরি করেন। সাজ্জাদ ও অন্যান্য অভিযুক্তদের সাথে আগে থেকেই টাকা পয়সা নিয়ে একটি পারিবারিক দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্ব আর পূর্বশত্রুতার জেড় ধরেই তারা আমাদের কাজে বাঁধা দেয় এবং দলবদ্ধ হয়ে আমাদের উপর আকস্মিক হামলা চালায়।

আরও পড়ুনঃ  নির্বাচনে পর্যায়ক্রমে ১৫০ জন পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ : ইসি সচিব

আহত সেরাজুল ও মেরাজ বলেন, মাটির নিচে পাইপ বসানোর কাজ চলমান থাকাবস্থায় অভিযুক্ত সাজ্জাদ, আজিম, নাসিম, আশরাফুল, আজগর, ফয়সাল, রনি, সামাদ ও শওকত সহ অজ্ঞাত আরো ছয়-সাতজন দেশিয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ করে। তাদের অস্ত্র ও লাঠিসোটার আঘাতে পাঁচজনের মাথা ফেঁটে যায়। ঐ অবস্থায় শাহমখদুম থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে থানা থেকে বলা হয়, আগে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসা শেষে থানায় এসে মামলা করার পরামর্শ দেন।

তারা আরো বলেন, অভিযুক্তরা একে অপরের আত্মীয়। তাদের সাথে প্রায় ছয় লাখ টাকার একটি দেনা পাওনার বিষয় আছে। বিদেশে পাঠানোর বিষয়কে কেন্দ্র করে সেই দেনাপাওনার টাকাই এখন কাল হয়ে দাড়িয়েছে। তারা প্রতিহিংসা বশত: তাদের নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করার একটি অপচেষ্টা করছে। বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবসা না করতে পারলে নতুন নির্মিত এই বাড়িতে তারা বসবাস করতে পারবেন না বলে জানান। নতুন নির্মিত বাড়ির প্রতি তাদের একটি প্রতিহিংসা কাজ করছে বলে জানান আহতরা। আহতরা সবাই নিজেদের আত্মীয়-স্বজন।

আরও পড়ুনঃ  থালাপতি বিজয়ের জনসভায় পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুল বলেন, রফিুকল, নজরুল, সেরাজুল, মেরাজ ও নূর সালেহ এরা মিথ্যাচার ও একতরফা অভিযোগ করছেন। মূল বিষয় হলো তারা পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য পাইপ লাইন যে জমির উপর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন সেটি তার মামা সাজ্জাদের। তারা তাদের নিকট অনুমতি না নিয়ে পেশিশক্তির মাধ্যমে বহিরাগতদের ভাড়া করে পাইপ লাইন বসাচ্ছিলেন। তাদের এই অবৈধ কাজে বাঁধা দিতে গিয়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও কিছুটা মারামারি হয়। দুইপক্ষের লোকজনই আহত হন। তাদের পক্ষের শওকত ও আজগর মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া আরো চার-পাঁচজন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজ বাড়িতে ফিরেছেন। তিনিও আহত হয়েচেন বলে জানান। শাহমখদুম থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সন্ধ্যার পরে থানায় যেতে বলেছেন।

আরও পড়ুনঃ  টাইফুন বুয়ালোই : ভিয়েতনামে নিহত ১৯, নিখোঁজ ২১

এবিষয়ে জানতে চাইলে ‘আল-জামি’আহ আস-সালাফিয়্যাহ (আল সালাফিয়া মাদ্রাসা) মাদ্রাসার ব্যবস্থাপক ফরিদ জানান, নজরুল, সেরাজুল, মেরাজ সহ এই পক্ষের লোকজন যে পাইপ লাইন স্থাপন করছিলেন সেটার একাংশ সাজ্জাদের জমি ও পাইপ লাইনের উপর দিয়ে যাচ্ছিল। সাজ্জাদ নিজের জমির উপর দিয়ে মেরাজ ও সেরাজুলকে পাইপ বসাতে দেবেনা। সাজ্জাদ নিজের বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য পাইপ লাইনের মাধ্যমে মাদ্রাসার ট্যাংকি ব্যবহার করতো। সেটি দেখে মেরাজ ও সেরাজুল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও তাঁকে অনুরোধ করেন তারাও সাজ্জাদের মতো মাদ্রাসার ট্যাংকির সাথে তাদের বাড়ির সোয়ারেজ লাইন সংযুক্ত করবেন। তাই তাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু উভয়পক্ষের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে বুধবার সকালে বাকবিতন্ডার এবপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।

জানতে চাইলে শাহমখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাছুমা মুস্তারী বলেন, আমাদের একজন অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উভয়পক্ষের একাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলেই শুনেছি। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তারা চাইলে অভিযোগ কিংবা মামলা করতে পারেন। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেবের বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।