নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শুক্রবার। রাত ৯:৫৯। ১ আগস্ট, ২০২৫।

পানিতে তলিয়ে থাকা গরিব কৃষকদের পাকা ধান কেটে দিলেন কৃষকদল

জুন ১, ২০২৫ ১০:৩৪
Link Copied!

হেলাল উদ্দীন, বাগমারা : উত্তর জামালপুর গ্রামের গরিব কৃষক বাবলু হোসেন প্রায় ১২ কাঠা জমির পাকাধান কাটতে পারছিলেন না। নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির পানিতে ধানগুলো ডুবে গেছে। শ্রমিকের মজুরিও বেশি। এনিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। তবে আজ সকালে এক ঝাঁক লোক এসে খেত থেকে পাকা ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। এজন্য কোনো মজুরিও পরিশোধ করতে হয়নি। শুধু বাবলু হোসেন নন, তাঁর মতো আরও আটজন চাষি এই সুবিধা পেয়েছেন। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের নেতারা বিনা মজুরিতে কৃষকদের ধান খেত থেকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন।

নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার বোরো খেতে পানি জমে যায়। পাকা ধান নিয়ে কৃষকেরা বিপাকে পড়েন। ধানকাটা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার পাশাপাশি সংকটও দেখা যায়। এতে করে বিপাকে পড়েন গবির কৃষকেরা। উপজেলার সোনাডাঙ্গা ইউনিয়নের ভরট্ট, উত্তর জামালপুর, শিমলা ও উত্তর জয়পুর গ্রামের গরিব কৃষকেরা বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। নিচু এলাকা হওয়াতে খেতের পাকাধানগুলো তলিয়ে যায়। বিষয়টি রাজশাহী জেলা কৃষক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম সমাপ্তের নজরে আসেন। তিনি সংগঠনের স্থানীয় নেতাদের এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া এবং গরিব কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। তাঁর এই নির্দেশনা পেয়ে কৃষক দলের নেতারা মাঠে নামেন। গতকাল শনিবার বিকেল থেকে এই কাজ শুরু করেছেন। আজ রোববারও কৃষকদলের নেতা-কর্মীদের এই তৎপরতা দেখা যায়।

আরও পড়ুনঃ  রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ

কাল শনিববার বিকেলে ভরট্ট গ্রামের স্থানীয় বিলে বিশেষ টি শার্ট পরে কয়েকজনকে ধান কাটতে দেখা যায়। এসময় মহিবুল ইসলাম রনি নামের একজনকে হাতে কাস্তে নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখা য়ায়৷ তিনি নিজেকে কৃষকের সন্তান ও শিক্ষক পরিচয় দিয়ে বলেন, গরিব কৃষকদের দুর্দশা দেখে এবং জেলা কৃষক দলের সভাপতির নির্দেশে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ধান কাটতে আমরা ৫০ জন কৃষক নেতা মাঠে আসছি। গবির কৃষকদের ধান কাইট্যা বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আট বিঘার ধান কাটা হয়েছে। এটা কোনো ফটো সেশন বা নিজেদের জাহির করার জন্য নয়। প্রকৃত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোই উদ্দেশ্য।

আরও পড়ুনঃ  দেশের ১২ অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত

এসময় আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, গরিব কৃষকদের ধান ঘরে পৌঁছে না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা ফিরবেন না। খেতের পাশে থাকা ভরট্ট গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা (৫০) বলেন, “বৃষ্টির পানিতে খেতের পাকা ধান মাটিতে পড়ে গেছিল। পাইট (শ্রমিক) পাওয়া যাচ্ছিল না, কিষক দলের নেতারা আইস্যা, ধান কাইটা বিপদ থাইক্যা রক্ষা করিল।” এমন মন্তব্য কৃষক রফিকুল, সোহেল রানা, আবদুস সামাদ, জামাল হোসেনসহ কয়েকজনের।

আরও পড়ুনঃ  ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে তফসিলের আগে : ইসি সচিব

সোনাডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক আয়নাল হক বলেন, কৃষক দলের নেতাদের কাজটা ভালো লেগেছে, আমি নিজেও অংশ নিয়েছি। গরিব কৃষকদের উপকার হলো।

বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, হঠাৎ করে বৃষ্টিতে ও বিলে পানি প্রবেশ করার কারণে পাকা ধান তলিয়ে গেছে। সোনাডাঙ্গার নিম্নাঞ্চলে এমন অবস্থা হয়েছে। তবে এভাবে গরিব কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কারণে উপকার হয়েছে। মুজুরি বৃদ্ধি পাওয়াতে গবির কৃষকেরা বেশি সমস্যায় পড়েছেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।