স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্যকোটা ফিরিয়ে নে’, ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘২৪-এর হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘জামাই কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগামী ২৫ তারিখের রাকসু নির্বাচনকে পুঁজি করেই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অবৈধ পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি তুলেছেন এবং তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যেই এ দাবি সামনে আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘পোষ্যকোটার মাধ্যমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরিত করা হয়েছিল। অনেক সংগ্রাম আর ত্যাগের ফলে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আমরা রাকসু পেতে যাচ্ছি। রাকসুকে জিম্মি করে পোষ্য কোটা নামক অন্যায্য জিনিসকে তারা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, অর্থাৎ পুরাতন মদ তারা নতুন মোড়কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থাকতে, আমরা থাকতে এই পোষ্য কোটা কখনো ফিরে আসতে দেব না। আমরা ২৫ তারিখেই রাকসু চাই এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার নামে পোষ্য কোটা ফিরিয়া আনার চেষ্টা করা হলে আমরা তা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এবং রাকসুর ভিপি পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘পোষ্য কোটা একটা মীমাংসিত ইস্যু। তারপরও ফের তা পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং এটা প্রশাসনের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ তারিখ রাকসু নির্বাচন, এই মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আমরা মনে করছি রাকসু বানচাল করার জন্য যে গোষ্ঠী কাজ করছে তারা তাদের সর্বশেষ চেষ্টাটা কাজে লাগানোর জন্য পোষ্য কোটাকে কাজে লাগাচ্ছে। আমরা পোষ্য কোটাকে ফিরতে দিতে চাই না। সেইসঙ্হে রাকসুকে সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই।’
এর আগে, পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ ৩ দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজকের মধ্যে দাবি বাস্তবায়িত না হলে ২১ তারিখ হতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণাও দেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বৈঠকে এই পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বেশ কিছু শর্তসাপেক্ষে রাবিতে প্রতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে স্নাতক প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪০ পেয়ে পাশ করা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানরা ভর্তির সুযোগ পাবেন।