হেলাল উদ্দীন,বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এর নাম একক প্রার্থী হিসেবে শোনা গেলেও সাধারন সম্পাদক পদে রয়েছে চারজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল, ভবানীগঞ্জ পৌর আ’লীগের সভাপতি মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দীন সুরুজ, এবং উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ। চারজন প্রার্থীই সাধারন সম্পাদক পদে জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদি। এদিকে কে হচ্ছেন উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এ সম্মেলন।
দলীয় নেতৃবৃন্দ সহ সাধারণ মানুষের প্রশ্ন কে হবেন উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রার্থীরা দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে নিজের পক্ষে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ করে এবং ইউনিয়ন আ’লীগ আয়োজিত বর্ধিত সভায় বক্তব্যের মাধ্যমে জানান দিচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা। নির্বাচিত হলে সভাপতির দিক নির্দশনায় উপজেলা আ’লীগকে শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গঠন করবেন বলে প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করছেন।
আগামী ১৪ নভেম্বর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রাথীদের একজন হলেন, উপজেলা আ’লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক পানিয়া নরদাশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল। গোলাম সারওয়ার আবুল ছাত্র জীবন থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৯৮ সালে রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সাথে বাগমারা উপজেলা ছাত্রলীগের পরপর ২ বার সহ-সভাপতি হিসেবে ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি গোলাম সারওয়ার আবুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (২) হিসেবে এক বার এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (১) হিসেবেও বাগমারা উপজেলা আ’লীগের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে দলের শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে সাধারণ সম্পাদককে তার পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করাই গোলাম সারওয়ার আবুলকে দলের গঠণতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সেই সাথে বাংলাদেশ আ’লীগের সদস্য নবায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি উপজেলার প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন এবং পৌর আ’লীগের কমিটি গঠনের কাজ সফলতার সাথে শেষ করেছেন তিনি। তাঁর পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সময়ে ত্রাণ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সেই সাথে নরদাশ ইউনিয়নে ৪ বার চেয়ারম্যান হিসেবে সততা এবং নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর পিতা মোসলেম উদ্দীন বর্তমানে বাগমারা উপজেলা আ’লীগের উপদেষ্ট মন্ডলীর সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন ভবানীগঞ্জ পৌর আ’লীগের সভাপতি ও ভবানীগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল। আব্দুল মালেক মন্ডল ২০১৩ সালে পৌর আ’লীগের সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় আবারও সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় ওয়ার্ড আ’লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
অপর প্রার্থী উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দীন সুরুজ ১৯৮৪ সালে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছেন। পরবতীতে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভবানীগঞ্জ কলেজ শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কারাবরণ করেন। ওই সালেই তিনি বাগমারা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেন। ১৯৯১ সালে আবারও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। নব্য সৈরাচার বিএনপি বিরোধী আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতীয় শোক দিবস পালনে পুলিশি বাধা ও প্রতিবাদে গ্রেফতার হন এবং কারাবরন করেন।
১৯৯২ সালে বাগমারা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুগ্ম আহŸায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক হন। ১৯৯৭ সালে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৫-২০১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলা আ’লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৩ সালের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। সেই থেকে অদ্যবধি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
এদিকে আরেক সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। পারিবারিক ভাবে তিনি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। পিতার হাত ধরে রাজনীতির হাতে খড়ি হয় তার। ছাত্রলীগ থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি। পরে মাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হিসেবে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ভাবে কাজ করতে থাকেন। এরপর আসাদুজ্জামান ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হন এবং বর্তমানে ইউনিয়ন আ’লীগের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। পরবর্তীতে উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে অদ্যবধি তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আসাদুজ্জামান আসাদ বর্তমানে বাগমারা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান।
11