স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) রাজশাহী জেলা কমিটি ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসুচি পালিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হলেও পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের আগ্রাসন নীতি এবং ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে পদ্মাসহ দেশের বিভিন্ন নদী আজ সংকটে পড়েছে। খরা মৌসুমে রাজশাহীর পদ্মা নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ে, নদীগুলো শুকিয়ে চরে পরিণত হয়। এতে সেচব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং কৃষকরা চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েন। পানি সংকটের কারণে জনগণ নানান স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে, বিশেষত দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে।
সমাবেশে অভিযোগ করা হয়, রাজশাহীর পদ্মা নদীর দীর্ঘ অংশে রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনও অব্যাহত রয়েছে, অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসন এ বিষয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে। ইতোমধ্যে পদ্মা নদীর প্রায় ১৭ মিটার এলাকা বাঁধ দখল করে স্থায়ী স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। বক্তারা সতর্ক করেন, যদি এভাবে নদী দখল ও দুষণ চলতে থাকে তবে রাজশাহী শহর একদিন দখলদারদের কবলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
বক্তারা আরও বলেন, নদী শুধু পানি বহনকারী নয়, বরং প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। নদী রক্ষা মানেই জনজীবন, কৃষি ও পরিবেশ রক্ষা করা। তাই প্রশাসন ও সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানান অবিলম্বে নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে, আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে গঙ্গা চুক্তি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং নদী ও জলাধার সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) রাজশাহী জেলা সভাপতি মাহাবুব হোসেন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বাপার সাবেক সভাপতি জামাত খান, বাপার সাধারণ সম্পাদক সেলিনা বেগম , গ্রীন ভয়েস রাজশাহী কলেজ শাখার সভাপতি রাবেয়া খাতুন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সংগঠনিক সম্পাদক সুভাস চন্দ্র হেমভ্রম , শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জুয়েল কিবরিয়া, বাপা রাজশাহী জেলার ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম নবী রনি এবং বাপার সাধারণ সম্পাদক সেলিনা বেগম, বাপার কোষাধক্ষ জাহিদ হাসন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক অহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির, সমাজকর্মী সম্রাট রায়হান, মওলানা আল-আমিন, মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহক ওয়ালিউর রহমান বাবু প্রমুখ।