নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বুধবার। সকাল ৬:১৫। ১৪ মে, ২০২৫।

রমজানের প্রথম দিনে মসজিদের ধ্বংসস্তুপে নামাজ আদায় করছেন গাজাবাসী

মার্চ ১২, ২০২৪ ১০:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি মসজিদের ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই কয়েক ডজন গাজাবাসী সোমবার, রমজানের প্রথম দিন তাদের নামাজ আদায় করেন। এর আগে রোজার মাসে মসজিদের ধংসস্তুপের মধ্যে নামাজ আদায়ের এমন দৃশ্য কখনো দেখেনি ফিলিস্তিনবাসী। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চল জুড়ে অস্থায়ী শিবিরে বসবাসকারী অনেকেই নামাজে অংশ নিতে পরেননি। তারা তাদের পরিবারের জন্য কিছু খাবারের সন্ধানে রাস্তায় নামেন। ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানে খান ইউনিসে নিজ পরিবারের জন্য তৈরি করা এক বাড়ির মালিক জাকি হুসেইন আবু মনসুর বলেন, “আমার ইচ্ছে হয়, বিমানগুলি আমার ওপর বোমা ফেলুক এবং আমি তাতে মারা যাই।”

৬৩ বছর বয়সী মনসুর এএফপিকে বলেন, “এই জীবনের চেয়ে মরে যাওয়া ভালো। কখনও কখনও আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি বাজারে দেখি, কিন্তু আমরা সেগুলি কিনতে অক্ষম।”

আরও পড়ুনঃ  ভারত বাহ্যিক সমস্যাকে অভ্যন্তরীণ করার চেষ্টা করছে : পাকিস্তান

এই রমজানে গাজায় বঞ্চনার রূপই যেন স্বাভাবিক হয়ে দেখা দিয়েছে। রাফাহ’র বাজারে খাদ্য সামগ্রীর সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কয়েকটি দোকানে ঐতিহ্যগতভাবে রমজানে বিক্রি হওয়া ‘কাতায়েফ’ নামে এক ধরনের মিষ্টান্ন পাওয়া যাচ্ছে। রোজার মাসে সাধারণত রাস্তায় যে উজ্জ্বল আলো ও সাজসজ্জা শোভা পায়, তা স্পষ্টতই অনুপস্থিত। তবে কিছু কিছু স্টলে রমজানের ফানুস প্রদর্শন করা হচ্ছে।

গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া ও বর্তমানে রাফাহতে আশ্রয় নেয়া ৩৯ বছর বয়সী মাইসা আল-বালবিসি বলেন, “আমরা শাকসবজির দামও দিতে পারি না, ফলের কথা ছেড়ে দিন।” দুই সন্তানের মা তার তাঁবুর কাছে এএফপিকে বলেন, “সবকিছুই খুব দামি। বাচ্চাদের ও আমার জন্য আমি কিছুই কিনতে পারছি না। এমনকি সবচেয়ে সাধারণ জিনিসের দামও আকাশচুম্বী হয়েছে।”

আরও পড়ুনঃ  ‘গুজবের রজনি’ পাকিস্তান নিয়ে মিথ্যাচারে মশগুল ভারতীয় মিডিয়া

৭ অক্টোবরে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন সামরিক অভিযানের মধ্যে ফিলিস্তিনিরা এই বছর রমজান পালন করছে। সরকারি ইসরায়েলি পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এএফপির তথ্য অনুযায়ী, হামাসের ওই অভিযানে প্রায় ১ হাজার ১৬০ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। আর, হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক অবিরাম হামলায় অন্তত ৩১ হাজার ১১২ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

বাস্তুচ্যুতদের জন্য জনাকীর্ণ শিবিরে বাধ্য হয়ে বসবাসকারিদের খাদ্য ঘাটতি ও অস্বাস্থ্যকর অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনযাত্রার বাস্তবতা পবিত্র মাসের উৎসবের মেজাজকে ম্লান করে দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, রাফাতে আশ্রয়প্রার্থী দেড়কোটি মানুষের বেশিরভাগই খাবার, পানি ও ওষুধ পাচ্ছে না। এর আগে, ইসরায়েল ও মিশরের গাজা উপত্যকার দীর্ঘ অবরোধ সত্ত্বেও, পূর্ববর্তী বছরগুলিতে রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলি পাওয়া যেত।

আরও পড়ুনঃ  নিজেদের ৩২টি বেসামরিক বিমানবন্দর বন্ধ করল ভারত

এবার রমজানের প্রথম দিনে সূর্য উদিত হওয়ার সাথে সাথে রাফাহ জুড়ে বিমান হামলার ধোঁয়া দেখা যায়। ৫০ বছর বয়সী আউনি আল-কায়য়াল বলেন, তিনি জেগে ওঠার সাথে সাথে মৃতদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স দেখতে পান। তিনি এএফপিকে বলেন, “রমজানের শুরুটা ছিল দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক, সর্বত্র রক্তের গন্ধ ও দুর্গন্ধ। আমি আমার তাঁবুতে জেগে উঠেছি এবং এ অবস্থা দেখে কাঁদতে শুরু করেছি।”

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।