স্টাফ রিপোর্টার : শহিদ জাতীয় চার নেতার অন্যতম এএইচএম কামারুজ্জামান ও এম মনসুর আলীসহ ৯টি জাহাজের কমিশনিং প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (১৫ নভেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের দু’টি অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল, পাঁচটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, দু’টি ফাস্ট প্যাট্রোল বোট এবং বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বেইস, ভোলা’র কমিশনিং প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে মূল অনুষ্ঠানস্থল চট্টগ্রামের কোস্টগার্ড বার্থ পতেঙ্গা’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীকে অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের একটি সুসজ্জিত চৌকষ দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. আশরাফুল হক অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে অধিনায়কগণের হাতে ‘কমিশনিং ফরমান’ হস্তান্তর করেন। নব্য কমিশনিংকৃত ৯টি জাহাজের ওপর অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও চিত্র ও পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং চট্টগ্রামের কোস্টগার্ড বার্থ পতেঙ্গা প্রান্তে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানপুত্র রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, মেয়রপত্নী বিশিষ্ট সমাজসেবী শাহীন আকতার রেনী, শহিদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দৌহিত্র সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি তানভীর শাকিল জয় ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনিংকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া তথ্যমতে, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের সময় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তিনি ইতালি সরকারের যে সহযোগিতার কামনা করেন তারই অংশ হিসেবে পরবর্তীকালে জি-টু-জি চুক্তির মাধ্যমে ইতালি নৌবাহিনীর চারটি করভেট প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মাধ্যমে অফশোর প্যাট্রোল ভেসেলে রূপান্তরিত করে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড-কে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার দুটি বিসিজিএস তাজউদ্দীন ও বিসিজিএস সৈয়দ নজরুল জাহাজ দু’টি ২০১৭ সালে তিনি কমিশনিং করেন। ইতালি হতে সংগৃহীত আরও দু’টি অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল-বিসিজিএস মনসুর আলী এবং বিসিজিএস কামারুজ্জামান আজ ( রোববার) কমিশনিং হলো।
দেশে তৈরি পাঁচটি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল-বিসিজিএস সবুজ বাংলা, শ্যামল বাংলা, সোনার বাংলা, স্বাধীন বাংলা ও অপরাজেয় বাংলা এবং দু’টি ফাস্ট প্যাট্রোল বোট- বিসিজিএস সোনাদিয়া ও কুতুবদিয়া রোববার এ বাহিনীর বহরে যুক্ত হলো।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ বিরোধীদলে থাকলেও জাতীয় সংসদে তাদের আনীত বিলের কারণেই ‘কোস্ট গার্ড’ একটি বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সৃষ্টির পেছনে একট মজার ঘটনা রয়েছে। তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিল এবং জাতীয় সংসদে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব আকারে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সৃষ্টির প্রস্তাব উত্থাপন করে। ইতোপূর্বে আনীত অন্যান্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাবের মত এটিরও বিরোধিতা করে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে তা বাতিল করে দিতে চেয়েছিল বিএনপি।
‘একটি পর্যায়ে আমরা দেখলাম সংসদে বিরোধী দলে থাকলেও সংসদে আমাদের উপস্থিতি বেশি ছিল এবং সরকারি দল বিএনপি’র সদস্যদের উপস্থিতির সংখ্যা খুব কম ছিল। বিষয়টি নিয়ে সংসদে আলোচনা হয় এবং বিতর্কের একটা পর্যায়ে সরকারি দল যখন এটাকে কন্ঠভোটে নাকচ করে দিতে চাইলো সঙ্গে সঙ্গে আমরা ডিভিশন ভোট দাবি করলাম,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এখানে সংসদীয় গণতন্ত্র অনুশীলনের যে ব্যাপারটি রয়েছে তা হচ্ছে, আমরা তখন তাৎক্ষণিকভাবে ডিভিশন ভোট দাবি না করলে তা নাকচ হয়ে যেতে পারতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের দাবি মোতাবেক জাতীয় সংসদের স্পিকার তখন ডিভিশন ভোট করলে, ভোট গুণে দেখা গেল তাদের দলের সংসদ সদস্যই বেশি, কাজেই তাঁদের আনীত সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি পাস হলো।
তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় নিরাপত্তায় আমাদের আনিত প্রস্তাবটি বিরোধী দলে থেকেও পাস করিয়ে আনাটা ছিল একটা বিরল ঘটনা। কিন্তু আমরা সেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলাম ১৯৯৪ সালে। সেখান থেকেই এই কোস্টগার্ড সৃষ্টি। পরবর্তীতে তা আইনও হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ছাড়াও বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে দু’টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, একটি ফ্লোটিং ক্রেন, দু’টি টাগ বোট এবং ১৬টি বোট তৈরি হচ্ছে। অচিরেই এগুলো কোস্ট গার্ডের বহরে সংযুক্ত হবে। কোস্ট গার্ডের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ডও নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার
প্রধান কার্যালয় : বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী।
মেইল: newssomoyerkotha@gmail.com , editorsomoyerkotha@gmail.com মোবাইল : ০১৮১৭-১২২২৪৩