পাবনা প্রতিনিধি : সারাদেশে পেঁয়াজের দামে যখন দিশেহারা মানুষ, তখন নিজের জমিতে আগাম জাতের পিঁয়াজ লাগিয়ে ভাল ফলন পাওয়ার আশায় পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের কৃষক শাহিনুর রহমান এখন নিশ্চিন্ত। শাহিনুর তার ২ বিঘা জমিতে মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বগুড়ার উদ্ভাবিত বারি-৫ জাতের উচ্চ ফলনশীল পেঁয়াজ এ বছর পরীক্ষামূলক আবাদ করেছে পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তত্ত্বাবধানে, জমিতে বড় হচ্ছে আগাম জাতের উচ্চফলনশীল পেঁয়াজ।
বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের মসলার মধ্যে পেঁয়াজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাই পেঁয়াজের উন্নত জাত আবিস্কারে তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে পিঁঁয়াজের ছয়টি জাত নিয়ে গবেষণা করলেও বারি-৫ জাতের এ পেঁয়াজ গবেষণায় সফলতা পাওয়ায় এখন কৃষক পর্যায়ে পরীক্ষামূলক আবাদ করা হচ্ছে। পরীক্ষামূলক আবাদে সফলতা পাওয়া গেলে আগামি বছর থেকে নতুন জাতের এ পেঁয়াজ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানায় গবেষণা কাজে নিয়োজিত দপ্তরটি।
বারি-৫ জাতের উচ্চ ফলনশীল এ পেঁয়াজ আবাদ করে বিঘাপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে। বর্ষার শেষে, সেপ্টেম্বর, অক্টোবরে প্রতিবছর পেঁয়াজের সংকট হওয়ার কারণ এ সময় মাঠে কোনো পিঁয়াজ থাকে না, কৃষকের ঘরেও পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকে নাÑ ফলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে প্রতিবছর এ সময় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পায়।
গবেষণায় সফলতা পাওয়ায় বারি-৫ জাতের এ পিঁয়াজ পরীক্ষামূলক আবাদের জন্য এবছর দেশের ১০ টি জেলাকে বাছাই করা হয়েছে। এসব জেলার প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক নতুন জাতের এ পেঁয়াজ বর্ষার শেষে আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া সাথী ফসল হিসেবে আবাদের জন্য তিনটি চিনিকলের ২৪ বিঘা জমিতেও পরীক্ষামূলক আবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নির্ধারিত জেলা ছাড়াও বেশি পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে, পাবনা, কুষ্টিয়ার আগ্রহী কৃষকদের কাছেও পরীক্ষামূলক আবাদের জন্য বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক আবাদ স¤পন্ন হয়েছে এখন উৎপাদনে সফলতা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।
কৃষক পর্যায়ে পরীক্ষামূলক উৎপাদনে সফলতা আসলে আগামি বছর থেকে নতুন জাতের এ পেঁয়াজ বাণিজ্যকভাবে সারাদেশে আবাদের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান ডক্টর হামিম ।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আযাহার আলী বলেন, পাবনা জেলা দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশের বেশি পেঁয়াজ প্রতিবছর উৎপাদন করে। দেশের পেঁয়াজের মোট উৎপাদন ২৪ থেকে ২৫ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে পাবনা থেকেই উৎপাদন হয় ৬ থেকে ৭ লাখ মেট্রিক টন। তবে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের এক চতুর্থাংশ প্রতিবছর নষ্ট হয়ে যায়। দেশে প্রতিবছর পিঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৮ থেকে ৩০ লাখ টন। ফলে প্রতি বছর ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় বলে জানান তিনি।
বারি-৫ জাতের এ পেঁয়াজ উৎপাদন করা গেলে, পেঁয়াজের সংকটের এ সময় পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমানো যাবে এবং দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তা।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : ইয়াকুব শিকদার
প্রধান কার্যালয় : বহরমপুর (সিটি বাইপাস), জিপিও-৬০০০, রাজপাড়া, রাজশাহী।
মেইল: newssomoyerkotha@gmail.com , editorsomoyerkotha@gmail.com মোবাইল : ০১৮১৭-১২২২৪৩