মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি : বাবার বাড়ি ভারতে, বিয়ে হয়েছে বাংলাদেশে। বাবার মৃত্যু সংবাদ পেলেও বাঁধসাধে কাঁটাতারের বেড়া অবশেষে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের বদন্যতায় শেষ বারের মত বাবার মুখটি দেখলো মেয়ে মিতু মন্ডল (৩৮)।
যশোরের শার্শা সীমান্তে শেষবারের মতো ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডল এর লাশ দেখল বাংলাদেশি স্বজনরা।
সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডল (৭৫) এর লাশ তার আত্মীয় স্বজনদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)।
বুধবার দুপুরে যশোরের শার্শার উপজেলার ধান্যখোলা সীমান্তের মেইন পিলার ২৫/৬-এস এর নিকট কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ স্বজনদের দেখানো হয় বলে জানান যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী।
এই বিজিবি কর্মকর্তা জানান,ভারতের বাগদা থানার বাঁশঘাটা গ্রামে ভারতীয় নাগরিক জব্বার মন্ডল (৭৫) বার্ধক্যজনিত কারণে মঙ্গলবার মারা যায়। মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বাংলাদেশি স্বজনরা লাশ দেখতে বিজিবির কাছে একটি আবেদন করেন। অপরদিকে বাংলাদেশে অবস্থিত জব্বার মন্ডল এর স্বজনদের লাশ দেখানোর জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে বিজিবি’র সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে দু’দেশের সীমান্তরক্ষীদের কোম্পানী কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ স্বজনদের দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এ সময় বাবার মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাংলাদেশে থাকা তার বড় মেয়ে মিতু মন্ডল (৩৮) সহ তার স্বজনরা। এ সময় দুই সীমান্তর সীমান্তরক্ষীদেরও চোখ মুছতে দেখা যায়। পরে লাশ দাফনের উদ্দেশে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বাংলাদেশি স্বজনরা তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যান।
বেনাপোল পোড়াবাড়ী গ্রামের বাবলু মন্ডল জানান,পাসপোর্ট ভিসা না থাকায় শশুরের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর তারা বিচলিত হয়ে পড়ে। পরে বিজিবি ক্যাম্পে আবেদন করার পর তারা শেষ বারের মতো মৃত্যু মুখটি দেখার সুযোগ করে দেয়। আমরা বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞ।
যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ি গ্রামের বাবলু মন্ডলের সাথে মিতু মন্ডল (৩৮) এর বিয়ে হয়। মিতুর বাবার বাড়ি ভারতের উত্তর ২৪ পরগণার বাগদা থানার বাঁশঘাটা গ্রামে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ধান্যখোলা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সেলিম মিয়া এবং ভারতের ৬৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন মোস্তফাপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সঞ্জয় কুমার রায়।