অনলাইন ডেস্ক : ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে আরো সেনা প্রত্যাহারে মার্কিন সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘একটি বড় ভুল’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা মিশ ম্যাকনেল। এ ছাড়া এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আরো রিপাবলিকান। এর মধ্যে রয়েছেন টেক্সাসের রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ম্যাক থর্নবেরি, সিনেটর বেন স্যাসে, ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল স্টোলটেনবার্গ প্রমুখ। এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে ২৫০০ সেনা প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘদিন ধরে এসব সেনাকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের সমালোচনাও করেছেন। মিশ ম্যাকনেল সতর্ক করেছেন এই বলে যে, হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করার আগে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিতে পৃথিবীকাঁপানো কোনো পরিবর্তন না আনতে। ট্রাম্প প্রসাশনের এ পদক্ষেপকে ভুল বলে আখ্যায়িত করেছেন ম্যাক থর্নবেরি। বর্তমানে আফগানিস্তানে লড়াই প্রায় শেষের পথে।
এ অবস্থায় সেনা প্রত্যাহার করা হলে তাতে সমঝোতা বা চুক্তিকে খাটো করা হবে। অন্যদিকে বাস্তবতার সঙ্গে এমন সিদ্ধান্ত মেলে না বলে উল্লেখ করেছেন সিনেটর বেন স্যাসে। তিনি বলেন, ওই দুটি দেশ থেকে এখন সেনা প্রত্যাহার করা হলে তা হবে বিশ্বের জন্য আরো বিপজ্জনক। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এবার নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ডেমোক্রেট জো বাইডেন। কিন্তু পরাজয় স্বীকার করেননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আফগানিস্তানের যুদ্ধ নিয়ে জো বাইডেন বলেছেন, আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলছে। সত্যিই এতে ক্লান্তি চলে আসে। কিন্তু এই যুদ্ধকে একটি দায়িত্বশীল অবস্থানে গিয়ে শেষ করতে হবে, যেখানে আমাদের উভয় পক্ষের দেশের ভিতরে কোনো রকম হুমকি আর না থাকে এবং আমাদেরকে আবার যাতে ফিরে আসতে না হয়।
ইরাকে মার্কিন সেনা ৫০০ কামিয়ে ২৫০০ করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানে সার্ভিস পারসোনালদের সংখ্যা ৪৫০০ থেকে কমিয়ে ২৫০০ করা হবে। এতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির প্রতিফলন ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস মিলার। যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণার সামান্য পরেই ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনে বেশ কয়েকটি রকেট ছোড়া হয়েছে। তা পতিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাছে। গত মাসে এই দূতাবাসকে টার্গেট করা বন্ধ করতে রাজি হয় ইরাকি মিলিশিয়ারা। তারপর এটাই এমন প্রথম হামলা। তবে ওই রকেট হামলায় কেউ হতাহত হয়েছেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায় নি।
উল্লেখ্য ২০০১ সালে থেকে আফগানিস্তানে অবস্থান করছে মার্কিন সেনারা। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তানে তালেবানদের উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে জোট হামলা চালায়। তখন আল কায়েদার ঘাঁটি ছিল আফগানিস্তানে। এরপর তালেবানরা আবার সংগঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে তারা বিদ্রোহী শক্তি হয়ে উঠেছে। তারা দেশটির দুই তৃতীয়াংশে সক্রিয় রয়েছে। ওদিকে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে তালেবানদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একটি ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে। তার অধীনে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার শুরু হওয়ার কথা। ওদিকে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক জোটের অংশ হিসেবে ইরাকে অবস্থান করছে মার্কিন কয়েক হাজার সেনা। তথ্যসূত্র : মানবজমিন