স্টাফ রিপোর্টার : বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে হস্ত ও কুটিরশিল্প মেলা। রাজশাহীতে প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে মাসব্যাপি হস্ত ও কুটিরশিল্প মেলা। করোনাকালে এ মেলাকে কেন্দ্র করে স্বাস্থ্যবিধির মানার বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে।
আয়োজকরা বলছেন, দেশীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে মাসব্যাপি ক্ষুদ্র, কুটির ও হস্তশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। করোনা মহামারির মধ্যেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তবে করোনা মহামারিকে অবহেলা না করে সব ধরনের সচেতনতা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মেলায় প্রবেশ পথে ব্যবস্থা করা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের। মাস্ক ছাড়া কেউ আসলে তাকে মাস্ক পরে আসার জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
মেলায় হস্ত শিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী রয়েছে, যেমন: নঁকশি কাঁথা, বুটিকের পোশাক, শালসহ দেশি ও বিদেশি পণ্য। মেলায় স্টলগুলোতে দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি বিদেশি পণ্য থাকলেও ক্রেতাদের আগ্রহ থাকে দেশি পণ্যের উপর। নারীরা ভিড় করছেন, চুড়ি-ফিতা ও বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে। তবে প্রসাধনী আর মুখরোচক খাবারের স্টলে নারীদের সমাগম বাড়লেও এখনও জমে উঠেনি মেলা।
কুটির শিল্পের বিকাশে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মাঠে মাসব্যাপি এ মেলা শুরু হয়। রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উইমেন অ্যান্টারপ্রিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওয়েব) এই মেলার আয়োজন করে। মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী উদ্যোক্তারা এসেছেন। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে তারা নিজ পণ্যকে আকর্ষণীয় করে তুলছেন। লাল-সবুজের কারু কাজে সেজেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
শৈল্পিক বুটিক হাউজের মালিক শিল্পী রানী শাহ বলেন, প্রতিবছরের চেয়ে এবার মেলার পরিবেশ ভিন্ন। আমরা প্রতি বছরই ওয়েবের আয়োজনে এ মেলায় অংশ নিই। এইবার করোনা মহামারির মধ্যেও আমরা মেলায় অংশগ্রহণ করেছি। আশা আছে এইবারও নিরাশ হব না। আমাদের এখানে হাতের কারু কাজের নানান প্রসাধনী রয়েছে। মুজিববর্ষকে সামনে রেখে আমরা লাল সবুজের উপরে সব নকশা করেছি। বেচাকেনা তেমন জমে না উঠলেও আগামী দিনগুলোতে সম্ভাবনা আছে।
আরেক ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানায়, আমার জানা মতে কোথাও তেমন মেলা হচ্ছে না। তবে রাজশাহীতে ওয়েবের আয়োজনে এই মেলা আরম্ভ হয়েছে। করোনা ভাইরাসের সচেতনতায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে সকল সচেতনতা ব্যবস্থা রয়েছে। ক্রেতা খুব একটা নেই। তবে আশা আছে আগামী দিনগুলোতে আরো ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে।
মেলায় পণ্য কিনতে এসেছিলেন গৃহিনী লিজা। লিজা জানান, মেলায় ভিড় তেমন নাই। সেজন্য সব দোকান ঘুরে পণ্য দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বাসা থেকে এই মহামারির সময় সে রকম ভাবে বের হতে পারেনি। এ রকম ভাবে মেলার আয়োজন করা হলে অনেকেই আসবে। তাছাড়া পছন্দের অনেক পণ্য পাওয়া যাচ্ছে এখানে- কম দামের মধ্যেই।
মেলায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন উম্মে হানি। তিনি জানান, অনেকদিন পরে বাসা থেকে বের হয়েছি। মেলায় এসে ভালোই লাগছে। আপাতত সব ঘুরে দেখছি।
মেলায় দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার তহিদুর রহমান জানান, মেলায় পুলিশ সদস্যদের জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা আছে। সব রকমের সচেতনতামূলক উদ্যোগ আছে।