অনলাইন ডেস্ক : ২০২৫ আইপিএলের পর্দা নেমেছে মাস দেড়েক আগে। এরই মধ্যে পরবর্তী সংস্করণের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজি। নিলাম ছাড়াও ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর সুযোগ রেখেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ।
ট্রেড উইন্ডো—এই নিয়ম কাজে লাগিয়েই ২০২৪ সালের আইপিএলের আগে গুজরাট টাইটান্স থেকে হার্দিক পান্ডিয়াকে কিনে নিয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এবার একই নিয়মে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক উইকেটরক্ষক সঞ্জু স্যামসনকে কিনতে চায় চেন্নাই সুপার কিংস। চলুন জেনে নেওয়া যাক ট্রেডিং উইন্ডোর বিস্তারিত।
ট্রেড উইন্ডো কী?
আইপিএলের অন্য দল থেকে ক্রিকেটার নিতে পারে যে কোনো দল। নিজেদের কোনো ক্রিকেটারের বদলে নতুন ক্রিকেটার নেওয়া যেতে পারে। অথবা সরাসরি টাকা দিয়েও অন্য দল থেকে ক্রিকেটার কেনা যেতে পারে। নিলামে বেশি টাকা পকেটে নিয়ে যেতে চাইলে দলগুলো কোনও ক্রিকেটারকে ছেড়েও দিতে পারে ট্রেডিং উইন্ডোর মাধ্যমে। এর জন্য নিলাম পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার হয় না। প্রয়োজন মতো দল গুছিয়ে নিতে পারলে নিলামের টেবিলে বেশ স্বস্তি মিলতে পারে।
ট্রেড উইন্ডো মূলত চালু থাকে দু’দফায়। নিলামের আগে একবার এবং পরে একবার। প্রতি বছর আইপিএল ফাইনালের সাত দিন পর খুলে যায় ট্রেড উইন্ডো। ২০২৫ সালের আইপিএলের ফাইনাল হয়েছে গত ৩ জুন। অর্থাৎ, ১০ জুন থেকে খুলে গিয়েছে প্রথম দফার ট্রেড উইন্ডো। বন্ধ হবে আগামী নিলামের সাত দিন আগে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এ বছরের নিলামের দিন ঘোষণা করলে ঠিক হবে, কবে পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রথম দফার ওই ট্রেডিং উইন্ডো। দ্বিতীয় দফায় উইন্ডো খুলবে নিলাম শেষ হওয়ার পরদিন থেকে। বন্ধ হবে আগামী আইপিএল শুরু হওয়ার ৩০ দিন আগে।
কীভাবে ক্রিকেটার কেনাবেচা হয়?
সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের সম্মতি ছাড়া তাকে কর্তৃপক্ষ বিক্রি করতে বা ছেড়ে দিতে পারবেন না। ট্রেডিং উইন্ডোয় সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের সম্মতি বাধ্যতামূলক। এই সময়ে সরাসরি টাকা খরচ করে আইপিএলের অন্য দল থেকে পছন্দের ক্রিকেটারকে কিনে নেওয়া যায়। যে দল থেকে কেনা হবে, তাদেরও সম্মতি থাকতে হয়। সব পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে দু’টি দল নিজেদের মধ্যে ক্রিকেটার অদলবদল করতে পারে।
বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সম্মতিও প্রয়োজন হয়। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল গত আইপিএলে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে সাফল্য পাননি। ৭টি ম্যাচে ৪৮ রান করেছিলেন। উইকেট পেয়েছিলেন ৪টি। তাকে ৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে কিনেছিল পাঞ্জাব কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাকে ছেড়ে দিতে হলে বা অন্য দলের কাছে বিক্রি করতে হলে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সম্মতি প্রয়োজন।
ট্রেড উইন্ডো থেকে যত খুশি ক্রিকেটার নেওয়ার সুযোগ নেই। কোনও দলেই ১৮ জনের কম ক্রিকেটার রাখা যায় না। অন্যদিকে, কোনও অবস্থাতেই ২৫ জনের বেশি ক্রিকেটারও রাখা যায় না। এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হয় দলগুলোকে। ক্রিকেটার কেনা বা অদলবদল করার জন্য অনুমোদিত টাকার অঙ্ক রয়েছে। তার বেশি খরচও করা যায় না। যেমন ২০২৬ সালের আইপিএলে দলগুলো ক্রিকেটারদের বেতন খাতে সর্বোচ্চ ১৫১ কোটি রুপি (সম্ভবত) খরচ করতে পারবে। অর্থাৎ, ট্রেড উইন্ডোয় টাকা দিয়ে ক্রিকেটার কিনলেও খরচের মোট অঙ্ক খেয়াল রাখতে হয়। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কথা। তাদের সব ক্রিকেটারের সম্মিলিত দাম ১১৯ কোটি ৮০ লাখ রুপি।
ট্রেডিং উইন্ডোয় কোন কোন দল সক্রিয়?
চেন্নাই কর্তৃপক্ষ কথা চালাচালি শুরু করেছে রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে। সঞ্জু স্যামসনকে দলে চায় চেন্নাই। পরিবর্তে রুতুরাজকে দিয়ে দিতে পারেন তারা। গত নিলামের আগে সঞ্জু এবং রুতুরাজ— দুই ক্রিকেটারকেই তাদের দল ধরে রেখেছিল ১৮ কোটি টাকা দিয়ে। তাই এই দুই ক্রিকেটারকে অদলবদল করলে কোনও দলকেই আলাদা করে টাকা খরচ করতে হবে না। নিউজিল্যান্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ডেভন কনওয়ের পারফরম্যান্সেও খুশি নন সিএসকে কর্তৃপক্ষ।
গত আইপিএলে ১৫৬ রান করেছেন কিউই এই ব্যাটার। তাকে ছেড়ে দিতে চাইছে সিএসকে। আবার কনওয়েকে পেতে আগ্রহী গুজরাট। তারা আবার ওয়াশিংটন সুন্দর এবং রাহুল তেওয়াটিয়াকে রাখতে চাইছে না। কনওয়েকে গুজরাটে পাঠিয়ে ওয়াশিংটন এবং তেওয়াটিয়াকে দলে নিতে পারে চেন্নাই। তবে দুই ভারতীয় ক্রিকেটারের মিলিত দামের চেয়ে কনওয়ের দাম কম। ফলে গুজরাটকে কিছু টাকাও দিতে হবে চেন্নাইকে।