নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বুধবার। রাত ১২:০২। ৯ জুলাই, ২০২৫।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত গরুর বলদ দিয়ে হাল চাষ : তানোরে ঘোড়া দিয়ে জমিতে মই চাষ

জুলাই ৮, ২০২৫ ৭:৪৭
Link Copied!

সাইদ সাজু, তানোর : রাজশাহীর তানোরে ঘোড়া দিয়ে রোপা আমন রোপনের জমিতে মই চাষ করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন তানোর উপজেলার মোহর গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দীন। এনিয় কৃষকদের মধ্যে কৌতুহলের পাশাপাশি চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। কৃষক নাসির উদ্দীন বলেন, গত সপ্তাহে ট্রাক্টর দিয়ে জমিতে হাল চাষ করার পর মই দেয়ার জন্য গরুর বলদের মই না পেয়ে ঘোড়া দিয়েই মই চাষ শুরু করি। এমন দৃশ্য দেখে আমার জমির পার্শ্বের জমির মালিক বায়না ধরেন তার জমিতেও মই চাষ করে দেয়ার জন্য।

তিনি বলেন, ২ বিঘা জমিতে মই চাষ দিয়ে ৪শ’ টাকা নিয়েছি, সময় লেগেছে মাত্র ১ ঘন্টা। গত কয়েক দিন থেকে প্রথম বারের মত এলাকার কৃষকদের জমিতে বানিজ্যিক ভাবে মই চাষ শুরু করছি। তিনি বলেন, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ ঘন্টায় ৭ বিঘা থেকে ৮ বিঘা পর্যন্ত রোপা আমন রোপনের জমিতে মই করছি। তিনি আরো বলেন, কৃষকদের গোয়ালে এখন আর গরুর বলদ নেই। নেই গরুর হাল ও গরুর গাড়ি। এক সময় প্রায় প্রতিটি কৃষকের গোয়ালেই হাল চাষের জন্য গরুর বলদ ও লাঙ্গলসহ ধান ঘরে তোলার জন্য গাড়িও ছিলো। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং কালের আবর্তে এখন বিলুপ্ত।

আরও পড়ুনঃ  বাউবি এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন এবং বিবিএ প্রোগ্রামের প্রথম বই বিতরণ উৎসব

তানোর সদর গ্রামের হামিদুর রহমান বলেন, মোহর গ্রামের জমির মাঠে আমার সাড়ে ৭ বিঘা জমি রয়েছে। ট্রাক্টর দিয়ে জমিতে হাল চাষ করার পর মই দেয়ার জন্য গরুর বলদের মই পাচ্ছিলাম না। ঠিক তখনই চোখে পড়ে নাসির উদ্দীনের ঘোড়া দিয়ে মই চাষ করার দৃশ্য। আমিও আমার জমিতে ১ হাজার ৫শ’ টাকার বিনিময়ে ঘোড়া দিয়ে মই চাষ করে নিয়েছি। গরু দিয়ে মই চাষ সময় ও খরচ বেশী লাগতো। তিনি বলেন, কম সময়ে খব সুন্দর ভাবে মই চাষ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, কৃষক নাসির উদ্দীন প্রতিদিনই কৃষকদের রোপা আমন রোপনের জমিতে মই চাষ করে দিচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  লঙ্কানদের হারিয়ে বড় সুখবর পেল বাংলাদেশ

কৃষকরা বলছেন, ট্রাক্টর দিয়ে জমিতে হাল চাষের পরও জমি সমান করতে মই চাষের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আগের মত কৃষকদের গোয়ালে এখন আর নেই বাংলার ঐতিহ্য গরুর বলদ ও হাল (লাঙ্গল) এবং গরুর গাড়ী। ফলে, ঘোড়া দিয়ে মই চাষ এটি ভালো একটি উদ্যোগ বলেও জানান কৃষকরা। কৃসকরা আরো বলছেন, গরুর বলদের চেয়ে ঘোড়ার দাম ও খরচ কম। তানোর উপজেলার হাতিনান্দা গ্রামের আদর্শ কৃষক সুলতান আহম্মেদ বলেন, আমাদের বাড়িতে এক সময় অনেক গরুর পাশাপাশি গরু ও মহিষের ৫ টি হাল ও গাড়ীও ছিলো। কিন্তু এখন একটাও নেই।

আরও পড়ুনঃ  ‘দেশে আওয়ামী লীগ বলে কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না’

তিনি বলেন, ট্রাক্টর দিয়েই জমি চাষ করা হচ্ছে, তারপরও মই চাষের প্রয়োজন হয়। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রাক্টর দিয়েই কোন রকমে কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তানোর উপজেলার চুনিয়া পাড়া গ্রামের আশরাফুল ইসলাম রন্জু বলেন, এক সময় জমি চাষসহ সকল কাজেই গরুর ব্যবহার ছিলো। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এবং কালের আবর্তে এখন এসব শুধুই স্নৃতি।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।