অনলাইন ডেস্ক : আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী বাজুর এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সামরিক অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। এতে সেখান থেকে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম আরিয়ানা নিউজ বুধবার (১৩ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়টি গতকাল মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছেন পাক কর্মকর্তারা।
সীমান্তে সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোপন আস্তানায় এই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান তারা।
সামরিক অভিযান শুরু করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে এটির কোনো ঘোষণা দেয়নি পাকিস্তান। বাজুরের জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা সাঈদ উল্লাহ বলেছেন, “এটি কোনো বড় অভিযান নয়। শুধুমাত্র সশস্ত্র গোষ্ঠীর আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে।”
শাহিদ আলী নামে অপর এক সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযানের কারণে অনেক মানুষ বাস্ত্যচ্যুত হয়ে পড়েছেন। সংখ্যাটি প্রায় এক লাখ ছুঁয়েছে। প্রাদেশিক সরকার থেকে আক্রান্ত প্রত্যেক পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া আল-খিদমাহ নামে একটি দাতব্য সংস্থা সাধারণ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে।
পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের কারণে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন ৫০ বছর বয়সী গুল ওয়ালি। তিনি জানিয়েছেন, এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তাকে বাড়ি ছেড়ে সরে যেতে হয়েছে। এ বৃদ্ধ একটি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
গুল ওয়ালি বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে আমরা খুব দ্রুত বাড়িতে ফিরতে পারব। ২০০৯ সালেও এখানে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় আমার গ্রামের প্রায় সব বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এবার আমাদের বাড়ির কি হবে জানি না।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী আফগান সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা মামুন্দে হেলিকপ্টার থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান জুলফিকার হামিদ অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, অভিযান চলছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) শক্ত অবস্থান রয়েছে আফগান সীমান্তে। গত কয়েক মাস ধরে তাদের দৌরাত্ম বেড়ে গেছে।
২০০৯ সালে ওই অঞ্চলে বিশাল অভিযান চালায় পাক সামরিক বাহিনী। এতে করে কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েন। এর পরের বছর পাক বাহিনী সেখানে নিজেদের বিজয় ঘোষণা করে। এরপর সাধারণ মানুষকে আবারও বাড়িতে ফিরতে দেওয়া হয়।
সূত্র: আরিয়ানা নিউজ