অনলাইন ডেস্ক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ভোটের প্রস্তুতি এখন ফুল গিয়ারে চলছে, দেশের মানুষ সাথে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন,সাক্ষাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ বা নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ঘোষণা করা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে কোন আলোচনা হয়নি।
সিইসি বলেন, নির্বাচনের তারিখ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাথে কোনো কথা হয়নি। তবে নির্বাচনের তারিখ ও সিডিউল আপনারা যথা সময়ে পাবেন এবং নির্বাচন কমিশন থেকেই জানতে পারবেন। আমরা অবশ্যই, এটা আপনাদের জানানো। তবে এ জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে। দেশের মানুষ সাথে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎকালে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে বলে আমি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছি।’
তিনি অরো বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টা সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে বুঝতে পেরেছি যে, দেশে যাতে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় এবং গণতান্ত্রিকভাবে যাতে ক্ষমতার হস্তান্তর হয় সে ব্যাপারে উনি অত্যান্ত আন্তরিক। এ ব্যাপারে উনার আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। যেমন আমাদের আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। নির্বাচনটাকে সুষ্ঠ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করার জন্য আমরা এখন একই তরঙ্গে আছি।’
সিইসি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কথায় আমরা যেটা বুঝতে পারি উনি আন্তরিকতার সাথে একটি অবাধ, সুষ্ঠ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে চান।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন নিয়েই এই মুহুর্তে আমারা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের প্রস্তুতি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। যা প্রস্তুতি নিচ্ছি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই নিচ্ছি। এই মুহুর্ত পর্যন্ত আমাদের ফোকাস জাতীয় নির্বাচন। কারণ প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় নির্বাচনের ওয়াদা দিচ্ছেন না, উনি জাতীয় নির্বাচনের কথা বলছেন।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিল এই দুটি মাসকে সামনে নিয়ে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যখনই সরকার নির্বাচন করতে চায় আমরা যাতে করতে পারি।’
বক্তব্যের শুরুতে এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে গত দুদিন অসুস্থ ছিলাম। তিনি বলেন, আমাদের রাসুল (সা.) এর হাদিস আছে তোমরা অনুমান দ্বারা পরিচালিত হইয়ো না। এই অনুমানের মধ্যে দেখলাম যে কেউ কেউ আমাকে পদত্যাগ করিয়ে দিছে। কেউ কেউ বলেছে আমি কথা বলার পর অসুস্থ হয়ে গিয়েছি। ’
সিইসি বলেন, ‘শুধু প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করাটাই সরকারের সাথে যোগাযোগ নয়। বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের সরকারের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। গত বৃহস্পতিবার উনার সাথে আমার সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তখনই আমার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যাওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত করা ছিল। উনার সাথে এর আগে আমি ফর্মালি কোনো বৈঠক করিনি। এখন উনিও নিরপেক্ষ আমরাও নিরপেক্ষ। আমরা আইন কানুনের মধ্যে থেকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করার চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণত সিইসির সাথে সরকার প্রধানের সরাসরি যোগাযোগ হয় কখন, যখন একটা দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকে। এখানে আমি যেমন নিরপেক্ষ উনিও (প্রধান উপদেষ্টা) নিরপেক্ষ। প্রধান উপদেষ্টার সাথে আমার এটা মূলত একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। তবে কোনো এজেন্ডা নিয়ে আমি কোনো আলোচনা করিনি।’
সিইসি আরো বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা যেটা জানতে চেয়েছেন, উনি একটা ফ্রি ফেয়ার এন্ড ক্রেডিয়াল ইলেকশন জাতিকে উপহার দিতে চান। আমাদের প্রস্তুতি আছে কি না, জাস্ট এইটুকু উনি জানতে চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি আমরা প্রস্তুতি ফুল গিয়ারে নিচ্ছি। নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মধ্যে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাতে জাতীয় নির্বাচন সরকার যখন করতে চায় এবং যখন নির্ধারিত হবে, আমরা যাতে সেটা করতে পারি।’
এ দিকে সাবেক দুজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা সিইসির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বিচারাধীন বিষয়। বিচারাধীন বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।