নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শনিবার। রাত ৪:২২। ৭ জুন, ২০২৫।

আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে : ‘ঢলন’ প্রথা বন্ধ

জুন ৫, ২০২৫ ১০:৪৯
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিভাগে এখন থেকে মণ দরে আম কেনাবেচা করা যাবে না। শুক্রবার থেকে আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে। বৃহস্পতিবার নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

রাজশাহী অঞ্চলে এক মণ আম কেনার সময় আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজি পর্যন্ত আম নিয়ে থাকেন। তবে চাষিদের ৪০ কেজি বা এক মণেরই দাম দেন। বিভিন্ন সময় এই ‘ঢলন’ প্রথা থামাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যকর হয়নি। তবে এবার কেজি হিসেবে আমের কেনাবেচা হলে ‘ঢলন’ নেওয়া বন্ধ হবে বলে প্রশাসন মনে করছে।

এবার এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশে কেজি প্রতি দরে আম কেনাবেচা করার সাধারণ নির্দেশনা দেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে ব্যবস্থা : আজাদ মজুমদার

বর্তমানে আমের বাজার জমজমাট। এখনো বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন পরিমাণে মণ দরে আম বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সব জায়গায় একই ওজনে আম বিক্রি পদ্ধতি প্রচলনের জন্য বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের, শিবগঞ্জ ও কানসাটের আমচাষী, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয়ে আসেন এবং বিষয়টি আলোচনা করেন। তারা সবাই বিভাগের সকল জেলায় যেন একই পদ্ধতিতে আম কেনাবেচা করা হয় তার পক্ষে একটি সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিভাগের সকল জেলার বিশেষ করে নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ।

বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ছে, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত আমের চাহিদা সারা দেশে বিস্তৃত। এই অঞ্চলের আমের গুণগত মান অত্যন্ত উন্নত হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু আমের কেনাবেচার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে আমচাষীরাওজন বা পরিমাপগত কিছু সমস্যায় আছেন। আম চাষীরা যখন আড়তে আম বিক্রি করতে যান, তখন আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজিতে মণ ধরে আম কিনে থাকেন। আম যেহেতু পচনশীল পণ্য, সেহেতু কৃষকেরা এই পদ্ধতিতে আম বিক্রি করতে বাধ্য থাকেন। এতে কৃষকেরা প্রায়শই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন বা হচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  রাজনৈতিক দলের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ইসিকে কঠোর হওয়ার আহ্বান নাহিদের

এ জন্য অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত বিভিন্ন জেলার আম চাষী, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা খোলামেলা আলোচনা করেন। কৃষকেরা একই ক্যারেটে বিভিন্ন সাইজের আম সাজিয়ে বিক্রি করে থাকেন বলে কেউ কেউ জানান। সভায় আম ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা একটি কমিশন ঠিক করার প্রস্তাব করেন। আলোচনায় বিভিন্নজন তাদের সুচিন্তিত মতামত দেন। তবে সকলে সম্মিলিতভাবে সর্বসম্মতক্রমে কেজি প্রতি দরে আম ক্রয়-বিক্রয়ের পক্ষে মতামত দেন।

আরও পড়ুনঃ  বাজেটে দাম কমার যত সুখবর

আলোচনা শেষে সভায় সর্বসম্মতভাবে জাত, গ্রেড ও গুণগত মান বিবেচনায় আম প্রতি কেজি দরে খুচরা কিংবা পাইকারী যে কোন পর্যায়ে কেনাবেচা করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আড়তদাররা কেনাবেচার কোন পর্যায়েই কোনরূপ কমিশন পাবেন না।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, সারাদেশে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত শুক্রবার (৬ জুন) থেকে রাজশাহী বিভাগের সকল জায়গায় একযোগে বাস্তবায়িত হবে। সভার এই সিদ্ধান্তগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সম্মিলিতভাবে সবাই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন এবং যার যার অবস্থান থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ করা হবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।