নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা সোমবার। রাত ৯:৩৭। ১৪ জুলাই, ২০২৫।

ইউএনওর বদলীতে মান্দা বাসীর চোখে জল

জুলাই ১৪, ২০২৫ ৫:৩২
Link Copied!

এস এ সিরাজুল ইসলাম,মান্দা : নওগাঁর মান্দায় দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সামান্য চেষ্টা আর সুন্দর মনোভাব, সেই সাথে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বদলে গেছে নওগাঁ মান্দা উপজেলার চিত্র। উপজেলা সদর থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত অন্ধকার সড়কে যোগ হয়েছে আধুনিক সড়কবাড়ি, সেই সাথে নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের ফেরিঘাট ব্রিজের উপরে যোগ হয়েছে আধুনিক রঙিন বাতি। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আত্রাই নদীর পাশ দিয়ে বয়ে চলা অন্ধকার রাস্তাটি আধুনিক এলইডি স্ট্রিট লাইটের আলোতে আলোকিত হয়ে গেছে। এখন সন্ধ্যার পর রাস্তাটি দিয়ে নির্বিঘ্নে গাড়ি-ঘোড়া ও হেঁটে চলাচল করেছে মানুষ। নদীর ওপাশ থেকে দেখলে মনে হয় এযেন এক অন্য রকম আলোর নগরী।উপজেলা সদরের চৌরাস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাটেও রয়েছে স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা। মান্দার ইউএনও শাহ আলম মিয়ার উদ্যোগ ও তদারকির কারণে পুরাতন জরাজীর্ণ ভবণ টেন্ডারের মাধ্যমে ভেঙে উপজেলার নতুন ভবণে দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলছে ৫তলা নির্মাণ সহ উপজেলা কমপ্লেক্সের ভিতরের রাস্তা নির্মাণের কাজ। ৫শত বছরের পুরানো ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নির্মিত হয়েছে সীমানা প্রাচীর, রাস্তা নির্মাণ,দীঘীতে নামার সিঁড়ি,ছাগল-মুরগি জবায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে জবাইখানা, সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাগানো হয়েছে টাইলস, মসজিদে আসা মানতকারিদের রান্নার স্থান সংস্কার করা হয়েছে,এছাড়াও দর্শণার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বেশকিছু নিরাপত্তা কর্মী। কর্মীরা দর্শণার্থীদের মসজিদ ভ্রমণে সহায়তা সহ মসজিদের সৌন্দর্য রক্ষায় সহায়তা করবে। মসজিদের গেস্ট হাউজ ও মসজিদ পরিচালনার জন্য দক্ষ কমিটি গঠন। সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে দেওয়া হয়েছে ওয়ালেস ব্যবস্থা। স্থানীয় সরকার ও পিআইও অফিসের সহায়তায় করা হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট সংস্কার কাজ,অচল ব্রীজকে ব্যবহার উপযোগী,অবৈধ রিং জাল জব্দ ও অথিতি পাখি শিকার বন্ধে করা হয়েছে অভিযান। খাস জমি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ,ভূমি আইনে করা বিভিন্ন মামলা নিরসন, করা হয়েছে ইউনিয়ন ভিত্তিক স্পষ্ট শুনানির ব্যবস্থা, ইউএনও শাহ আলম মিয়া একা উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দপ্তরের কাজ করেছেন সমান তালে। ফুটবল টিম গঠন করে জেলা থেকে প্রথম বারের মতন বিজয়ী হয়ে প্রথম পুরস্কার অর্জন করে মান্দাবাসীকে করেছে সম্মানিত । মোবাইল আসক্তি ও মাদক থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখতে ১৪টি ইউনিয়নকে সংগঠিত করে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন ও প্রথম পুরস্কার মটরসাইকেল পুরস্কার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের উৎসাহ জোগাতে কাজের মূল্যায়ন ও পুরস্কারকের ব্যবস্থা করেছেন ইউএনও। মান্দাকে বাংলাদেশ সকল মানুষের কাছে তুলে ধরতে তার লেখনিতে মান্দার নাম করণ করেছেন “মনোহরা মান্দা” মান্দাকে ঘিরে লিখেছেন অনেক ছোট গল্প,কবিতা। ঘুরে বেড়িয়েছেন পথে পান্তরে মিশেছেন সাধারণ মানুষের সাথে। নৌকায় বসে তৃপ্তি ভরে খেয়েছেন জেলেদের সাথে। আর গল্পে তার বাসভবণের রান্নাঘরের নাম করণ করেছেন “নাদিরা হোটেল”। অসহায় বৃদ্ধা আলো বিবির ঘর করেছে আলোকিত। হাসপাতাল থেকে ভিক্ষুকের চাল চুরি যাওয়া সেই ভিক্ষুকের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মনিটরিং ব্যবস্থা। প্রান্তিক কৃষকদের হাটে সরাসরি কৃষি পণ্য বিক্রি করতে হাটে বসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।ইউএনও শাহ আলম মিয়া গত ১১নভেম্বর ২০২৪ মান্দাতে যোগদান করেন এরপর তিনি ঠাকুরগাও জেলাতে এডিসি হিসেবে যোগদান করবেন বলে জানা গেছে।
মান্দা উপজেলা বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম জানান, এত অল্প সময়ে মান্দাকে যেভাবে ঢেলে সাজাতে শুরু করেছেন তিনি আরো কিছুদিন থাকলে কাজগুলো শেষ করতে পারতো। ব্যবসায়ী রকিবুল ইসলাম বলেন,ইউএনও সাহেব খুব দক্ষ ও বিচক্ষণ মানুষ মান্দাকে বদলের ছোঁয়া লাগিয়েছেন তিনি। তার জহুরির চোখ, আমরা সাধারণ ভাবে যা চিন্তা করিনা তিনি তার চেয়ে বেশি চিন্তা করেন। কয়েক মাসেই মান্দার মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে তিনি। প্রথমিক সহকারি শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন বিদায় বেলাতে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন অফিস ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে পদোন্নতি জনিত বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। যোগদানের পর শিক্ষক,সাংবাদিক, ব্যবসায়ী,ডায়াগনিষ্টিক সেন্টার মালিক, মসজিদ, মন্দির কমিটি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের মানুষের সাথে মতবিনিময় করে মনের ভাব জেনেছিলেন তিনি।এসব গুণের কারণে সহজে মান্দা উপজেলাকে সহজে আপন করে নিতে পেরেছেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে বিভিন্ন অপরাধে গ্রেপ্তার ৯

ইউএনও শাহ আলম মিয়ার বলেন, আমার কখনো মনে হয়নি মান্দা আমার না। আমি সব সময় চিন্তা করেছি মানুষের সাথে মিশে তাদের কথা শুনে কাজ করার। মান্দাকে আধুনিক ভাবে সাজাতে যেটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। এমন কেউ নেই যে আমার অফিসে এসে আমার সাথে দেখা না করে গিয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ সকলকে সাথে নিয়ে আমি কাজ করেছি। মান্দা পথপ্রান্তর,নদী,বিল গ্রামের আকাবাঁকা রাস্তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। মান্দাতে দেখার মতন যা কিছু আছে তা অন্য কোথাও নেই। আমি যেখানেই থাকবো মান্দার খবর রাখবো।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।