অনলাইন ডেস্ক : ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের সীমান্তবর্তী গ্রামে যেতে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী।
নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ তাকে থামিয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলায় বন্যাদুর্গত গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে স্থানীয় পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সোমবার কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, রাভি নদীর ওপারে থাকা সীমান্তবর্তী টুর গ্রামে তাকে যেতে দেওয়া হয়নি।
রাহুল গান্ধী এদিন অমৃতসর ও গুরদাসপুর জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে ছিলেন। তিনি অমৃতসরের ঘোনেওয়াল ও গুরদাসপুরের গুরচাক গ্রামে গিয়েছিলেন। তবে কংগ্রেসের দাবি, টুর গ্রামে যাওয়ার পথে পুলিশ তাকে আটকে দেয়। পাঞ্জাব কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিং রাজা ওয়ারিং জানান, পুলিশ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তাকে যেতে দেয়নি।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাহুল গান্ধী সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করছেন কেন তাকে নদীর ওপারের গ্রামে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “আপনারা বলছেন ভারতীয় ভূখণ্ডে আমাকে নিরাপদে রাখতে পারবেন না। এটাই তো বলছেন?”
জবাবে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সবসময় আপনাকে সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত।”
এরপর রাহুল পাল্টা প্রশ্ন করেন, “কিন্তু আপনি বলছেন ওটা (রাভি নদীর ওপারে গ্রাম) ভারত, আর সেখানে আমাকে সুরক্ষা দিতে পারবেন না। এটা কি ভারত নয়?” এসময় তার সঙ্গে ছিলেন রাজা ওয়ারিং এবং এমপি সুখজিন্দর রন্ধাওয়া।
রাহুল আরও বলেন, “আপনারা বলতে চাইছেন বিরোধী দলের নেতা যেতে পারবেন না, কারণ পাঞ্জাব পুলিশ সুরক্ষা দিতে পারছে না?”
পরে কংগ্রেস নেতা ও পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নিও অভিযোগ করেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাহুল গান্ধীকে বাধা দিয়েছে। তিনি বলেন, “ওই গ্রামে আমাদেরই মানুষ থাকে। তিনি (গান্ধী) তাদের খোঁজ নিতে চেয়েছিলেন। আমরা গত তিন দিন ধরে সেখানে মেডিকেল ক্যাম্প চালাচ্ছি। এটা দুঃখজনক যে তাকে গ্রামবাসীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।”
রাজা ওয়ারিং বলেন, রাহুল গান্ধী বন্যাদুর্গত মানুষদের সমস্যার কথা সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী বলছে আপনি যেতে পারবেন না, হুমকি আছে। যদি ভারতে থেকেই পাকিস্তানের হুমকি থাকে, তবে আমরা আসলে কোথায় নিরাপদ?
সিনিয়র কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিং বাজওয়া তীব্র সমালোচনা করে এটিকে “লজ্জাজনক ও সংবেদনশীলতাহীন” সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, অযৌক্তিক নিরাপত্তা অজুহাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রাহুল গান্ধীর প্রবেশ আটকে দেওয়া হয়েছে।
বাজওয়া আরও বলেন, এটা নিরাপত্তাজনিত সমস্যা নয়, বরং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, যাতে জবাবদিহি এড়ানো যায়। তিনি অভিযোগ করেন, সীমান্তবর্তী যেসব গ্রাম ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে না আম আদমি পার্টি, না বিজেপি— কোনও নেতাই পা রাখেননি।
বাজওয়া বলেন, “ওরা আমাদেরই মানুষ, আমাদের সহ-নাগরিক। শুধু সীমান্তে বাস করে বলেই তারা সাহায্য পাওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন না।”