নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বৃহস্পতিবার। ভোর ৫:০১। ১৯ জুন, ২০২৫।

এলজিইডির কাজে ‘অনিয়ম’ পদত্যাগ করানো হলো ইউপি চেয়ারম্যানকে

জুন ১৮, ২০২৫ ১১:০৯
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) একটি রাস্তার কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যানকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (১৮ জুন) দুপুরে উপজেলার বাসুদেবপুর ইউপির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে।

এই ইউনিয়নের স্লুইসগেট থেকে বাসুদেবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি রাস্তায় সিমেন্টের ঢালাই করছে এলজিইডি। ৫০ লাখ টাকার এই কাজটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিয়ে করছেন হেনা, সেলিম ও সিজান নামের তিন ব্যক্তি। এই কাজে সিমেন্টের অনুপাত কম দেওয়া এবং শিডিউল অনুযায়ী পূরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুলাল, তুহিন, মাফি ও নাজমুলসহ ৫০ থেকে ৬০ জন স্থানীয় ব্যক্তি এসব অভিযোগ তুলে প্রতিকারের জন্য ইউপি কার্যালয়ে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের কাছে যান। তখন চেয়ারম্যান জানান, রাস্তাটির কাজ তো করছে এলজিইডির। এখানে ইউনিয়ন পরিষদের কিছু করার নেই। এ সময় কেউ কেউ বলে ওঠেন, চেয়ারম্যান এই কাজ থেকে টাকা খেয়েছেন। এ সময় স্থানীয়রা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল যায়। তবে পুলিশ স্থানীয়দের সরাতে পারেনি।

আরও পড়ুনঃ  যেভাবে বিনামূল্যে অনলাইনে দেখবেন ক্লাব বিশ্বকাপ

পরে অনিয়ম-দুর্নীতির দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে চাপ দেওয়া হয় চেয়ারম্যানকে। এ সময় লিখে আনা একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে। পদত্যাগপত্রে লেখা হয়েছে, ‘আমি আমার দুর্নীতির কারণে এবং দুর্নীতি জনগণের কাছে প্রমাণিত হওয়ায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।’ এই পদত্যাগপত্র নিয়ে স্থানীয়রা ইউপি কার্যালয়ে তালা দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে জমা দিতে যান।

আরও পড়ুনঃ  ১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ইউপি কার্যালয়ে অবরুদ্ধ ছিলেন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এভাবে তো জোর করে পদত্যাগ হয় না। আমি স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়েছি। পদত্যাগ করিনি।’ তিনি বলেন, ‘এখানে রাস্তা-টাস্তা কিছু না। এলাকার একটা পক্ষ আমাকে সরাতে চাইছে। তা না হলে কাজ এলজিইডির, আর আমাকে চাপ দেওয়া হয়?’

কাজে অনিয়ম হচ্ছে না দাবি করে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুর রহমান বলেন, ‘কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন বিষয়টা বুঝেছে। তারা ইউএনও অফিসে এসেছিল। তারা লিখিত দিতে চেয়েছে যে, কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না এটা তারা বুঝেছে। তাদের সমস্যা চেয়ারম্যানের সঙ্গে। এ জন্যই তাকে পদত্যাগে চাপ দেয়া হয়।’

আরও পড়ুনঃ  মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

এ বিষয়ে ইউএনও ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘আমি ফরমালি এই পদত্যাগপত্র পাইনি। যতক্ষণ না পাচ্ছি, ততক্ষণ তিনিই চেয়ারম্যান। তবে স্থানীয় লোকজন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। আমি লিখিত অভিযোগ দিতে চেয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পদ-পদবী না থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে পরিচিত। তবে আওয়ামী লীগের আমলে এলাকার সাবেক এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধ ছিল তার। ‘কথা না শোনার কারণে’ সুযোগ পেলেই ফারুক চৌধুরী তাকে অপমান করতেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।