অনলাইন ডেস্ক : গত এপ্রিলে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। আগে থেকেই সেই বিরূপ সম্পর্কের প্রভাব পড়ছিল ক্রিকেটের ২২ গজেও। নতুন পরিস্থিতিতে এই দুই দল আন্তর্জাতিক মহাদেশীয় কিংবা আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টেও পারস্পরিক মুখোমুখি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এমনকি আসন্ন এশিয়া কাপ নিয়েও রয়েছে দোলাচল। তাতে নাকি নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে!
এখনই চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত টানা ভুল হবে দাবি করে ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানিয়েছে, এশিয়া কাপ নিয়ে বড় আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক বিরোধের জেরে যা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তবে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে পরের সপ্তাহে। জুলাইয়ের শুরুতেই ৬ দলের এই প্রতিযোগিতার সূচি ঘোষণার আশা রয়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি)।
সব ঠিকঠাক থাকলে পরিকল্পনা অনুযায়ী এসিসি সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আয়োজন করতে পারে এশিয়া কাপ। পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতাও এই ফরম্যাটে আয়োজনের কথা আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। সম্ভাবনা রয়েছে ভারত-পাকিস্তানসহ প্রতিযোগী সব দলেরই অংশগ্রহণের। বাকি দলগুলো হচ্ছে– বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ইতোমধ্যে এশিয়া কাপ নিয়ে প্রচারণামূলক কিছু কার্যক্রমও হাতে নিয়েছে এসিসি।
টুর্নামেন্টটি কোথায় হবে এখনও বিষয়টি চূড়ান্ত নয়, তবে আলোচনা চলছে হাইব্রিড ফরম্যাট নিয়ে। এসিসির পূর্বঘোষণা অনুযায়ী– এশিয়া কাপ আয়োজনের স্বত্ত ভারত কিংবা পাকিস্তানের হাতে থাকলে, সফরকারী দলের কথা বিবেচনা করে তাদের জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যু রাখা হবে। আসন্ন এশিয়া কাপের আয়োজক ভারত। তবে এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং তাকে কেন্দ্র করে উভয়দেশের সামরিক সংঘাতে জড়ানোয় অনিশ্চয়তায় নতুন হাওয়া লেগেছে। ভারত থেকে দাবি ওঠে পাকিস্তানের সঙ্গে কোথাওই কোনো ম্যাচ খেলার। এমনকি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টেও প্রতিবেশী দেশটিকে বয়কট করতে চায় রোহিত-কোহলিদের দেশ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অবশ্য সম্প্রতি আইসিসি দুটি বৈশ্বিক ইভেন্টের সূচি ঘোষণা করে। যেখানে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক যৌথভাবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা এবং নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে। দুটি টুর্নামেন্টেই ভারত-পাকিস্তানকে একই গ্রুপে রাখা হয়েছে। যথাক্রমে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের মেয়েরা ৫ অক্টোবর কলম্বো ও ১৪ জুন এজবাস্টনে মুখোমুখি হবে। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই, এসিসি কিংবা আইসিসি কেউই বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। বিশেষ করে আইসিসি কিংবা এসিসির জন্য ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ মানেই বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের সুযোগ।
সবমিলিয়ে আসন্ন এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তান পুরুষ দলের মুখোমুখি ম্যাচ হওয়ার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে। দুটি দেশ ২০০৯ সালের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা বন্ধ করার পর তাদের মুখোমুখি লড়াই দেখার সুযোগ মেলে কেবল এসিসি কিংবা আইসিসির ইভেন্টে। মহাদেশ ও বৈশ্বিক ক্রিকেটের দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থাও তাদের ম্যাচ নিয়ে তুমুল উন্মাদনার ফায়দা নিতে ভুল করে না। সর্বশেষ ২০২৩ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। এরপর ওয়ানডে বিশ্বকাপ হাতছাড়া হলেও, রোহিত-কোহলিরা পরপর জিতেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।