নাটোর প্রতিনিধি : ‘শিক্ষার কোনো বয়স নেই’—কথাটি আবারও প্রমাণ করলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার বাঘা কাকড়ামারী গ্রামের আব্দুল হান্নান। ২০২৩ সালে একইসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দুজনেই উত্তীর্ণ হন। ৪০ বছর বয়সেও শিক্ষার প্রতি অদম্য আগ্রহ ও মনোবলই তাকে এনে দিয়েছে নতুন সাফল্যের গল্প। মেয়ের সঙ্গে একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দারুণ ফলাফল করে পাস করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, বাবা আব্দুল হান্নান পেয়েছেন জিপিএ-৪.৩৩ এবং মেয়ে হালিমা খাতুন পেয়েছেন জিপিএ-৩.৭১। বাবা পরীক্ষা দিয়েছেন বাঘা কাকড়ামারী কলেজ থেকে, আর মেয়ে পরীক্ষা দেন গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে প্রথমবার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন হান্নান। কিন্তু সে সময় তিনি অকৃতকার্য হন। এরপর সংসারের দায়ে লেখাপড়া ছেড়ে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় একটি ছোট চায়ের দোকান দেন। দিন গড়ায়, সংসার বড় হয়, তবে আব্দুল হান্নানের মনের কোণে শিক্ষালাভের ইচ্ছেটা আরও প্রবল হতে থাকে। অবশেষে মেয়ের উৎসাহে ২৫ বছর পর ফের বই হাতে তুলে নেন তিনি।
মেয়ে হালিমা খাতুন বলেন, ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব। বাবার স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করা। এবার একসঙ্গে এইচএসসি পাস করতে পেরে আমি গর্বিত। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
আব্দুল হান্নান বলেন, সংসারের চাপে স্বপ্নটা থেমে গিয়েছিল। মেয়ে আর স্ত্রীর উৎসাহে আবার শুরু করি। এখন এইচএসসি পাস করেছি। আমার ইচ্ছা, পড়ালেখা চালিয়ে একদিন মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করব।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, এটি নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণাদায়ক একটি দৃষ্টান্ত। একসঙ্গে বাবা-মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে পুরো সমাজে শিক্ষার প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আগ্রহ বাড়াবে।