নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শুক্রবার। সন্ধ্যা ৭:১০। ৩০ মে, ২০২৫।

কক্সবাজারে তলিয়ে গেছে শত শত ঘরবাড়ি, যুবকের মৃত্যু

মে ২৯, ২০২৫ ১১:০৫
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল সাগর। জোয়ারের পানির স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে ৩-৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে কূলে আছড়ে পড়ছে। কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সেন্টমার্টিন, টেকনাফসহ বিভিন্ন উপকূলের নিচু এলাকায় জোয়ারের পানি তীর উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি।

নিম্মচাপের প্রভাবে বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃহস্পতিবারও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। উপকূলে৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এর মধ্যে জেলার ঈদগাঁওসহ নানা এলাকায় ৩৩ কেভি লাইনে গাছ উপড়ে পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুত সংযোগ। এ পরিস্থিতিতে ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার দেখলে স্পর্শ না করার পরামর্শ দিয়েছে পল্লী বিদ্যুত অফিস।

এদিকে জোয়ারের পানিতে ডুবে মহেশখালীতে দানু মিয়া (৪১) নামে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙা এলাকায় জোয়ারের পানিতে ডুবে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুনঃ  ক্রাশ খেয়ে সিনেমার নায়িকা হতে চাইলেন স্বস্তিকা!

দানু মিয়া ঘটিভাঙা এলাকার মৃত নূর হোসেনের ছেলে এবং তিনি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, সাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। দানু মিয়া দুপুরে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে জোয়ারের পানিতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে উদ্ধার করে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

বৈরি আবহাওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছে কক্সবাজার সৈকতে আসা পর্যটকরা। ঝড়ো বাতাস, বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাসের কারণে বন্ধ হয়ে পড়েছে পর্যটন এলাকার বিভিন্ন দোকানপাট। টানা বৃষ্টিপাতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। প্রায় সবকটি এলাকায় চলছে তীব্র লোডশেডিং।

ফেনী থেকে আগত পর্যটক বশির আহমদ দম্পতি জানায়, বুধবার কক্সবাজার এসে বৃষ্টিতে হোটেলে আটকা পড়েছি। বৃহস্পতিবার রাতেই চলে যাওয়ার চেষ্টা করবো।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে বিশেষ অভিযানে ১ জনসহ গ্রেপ্তার ৮

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান জানান, বুধবার ৯১ মিলিমিটার এবং বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির তোড়ে প্লাবিত হয় কুতুবজোম, মাতারবাড়ির সাইরার ডেইল, ধলঘাটা ও ছোট মহেশখালীর নিম্নাঞ্চল। লোকালয়ের রাস্তাঘাট, দোকানপাট ও শত শত ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছেন। সাগরের ওপর ঘনীভূত লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় হঠাৎ জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ছোট মহেশখালীর মূল সড়ক। পানি ঢুকে পড়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে। অনেকের সম্পদ পানির তোড়ে ভেসে যায়। এ সময় জোয়ারের পানিতে ডুবে দানু মিয়া নামে এক যুবকের মৃত্যু হয় বলে খবর পেয়েছি।

আরও পড়ুনঃ  বিসিবির অন্তর্বর্তী সভাপতির দায়িত্ব নিতে পারেন বুলবুল!

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেদায়েত উল্যাহ জানান, উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, একাধিক বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়া হচ্ছে এবং দুর্যোগ পরবর্তী সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন।

কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুত সমিতির জিএম মকবুল আলম বলেন, আমরা প্রকৃতির কাছে অসহায়। নিম্নচাপের কারণে সারাদেশে দমকা বাতাসসহ থেমে থেমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সমুদ্রের উপকূল হওয়ায় কক্সবাজার জেলায় এর প্রভাব বেশি। ঝড়বাতাসে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি উন্নতি হলে সেগুলো ঠিক করা হবে।-ইত্তেফাক

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।