নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা রবিবার। বিকাল ৪:১৭। ১০ আগস্ট, ২০২৫।

গাজায় অনাহার-অপুষ্টিতে আরও ১১ জনের মৃত্যু

আগস্ট ১০, ২০২৫ ১:৫৫
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একথা জানিয়েছে। সর্বশেষ এই প্রাণহানির জেরে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১২ জনে।

মৃতদের মধ্যে ৯৮ জনই শিশু। শনিবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে অন্তত ৩৮ জন নিহত এবং আরও ৪৯১ জন আহত হয়েছেন। এদিকে ইসরায়েল গাজা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর জানা গেছে, শহরটি খালি করার জন্য ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার অনুমোদিত এবং প্রকাশিত ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনায় গাজা যুদ্ধের অবসানের জন্য পাঁচটি ‘মূলনীতি’ উল্লেখ করা হয়েছে, যার একটি হলো ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। ইসরায়েলি গণমাধ্যম বলছে, প্রথম ধাপে গাজা সিটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং সেখানকার আনুমানিক ১০ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণ অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় তারেক রহমানের

এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলসহ ইসরায়েলের ভেতরেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিছু সামরিক কর্মকর্তা এবং গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের সদস্যরাও এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন, কারণ তারা বন্দিদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সমালোচনাকে অগ্রাহ্য করে বলেছেন, এতে তাদের সংকল্প দুর্বল হবে না।

তবে যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষাকৃত নরম সুরে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এ সপ্তাহের শুরুতে বলেছেন, গাজা সম্পূর্ণ দখল করা হবে কি না, তা “প্রায় পুরোপুরি ইসরায়েলের সিদ্ধান্ত”।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, নেতানিয়াহুর সরকার আগামী ৭ অক্টোবর থেকে গাজা সিটিতে সামরিক অবরোধ শুরু করবে। তার আগে দুই মাসের মধ্যে সেখানে থাকা আনুমানিক ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যা পুরো গাজা উপত্যকার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।

আরও পড়ুনঃ  জুলাই স্মৃতি জাদুঘরের অগ্রগতি পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

যুদ্ধের আগে গাজা সিটিতে প্রায় ৬ লাখ মানুষের বাস ছিল, তবে যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলি অভিযানে বিপুল সংখ্যক মানুষ শহরটিতে আশ্রয় নিয়েছে। এখন সেখানে অনেকেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়ে তাঁবুতে বা আংশিক ধ্বংসস্তূপে পরিণত ভবনে বসবাস করছেন।

জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই পরিকল্পনা ইতোমধ্যে চরম কষ্টে থাকা মানুষের ওপর আরও ভয়াবহ দুর্ভোগ ডেকে আনবে। জাতিসংঘের সহায়তায় কাজ করা খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, গাজায় ইতোমধ্যেই “দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি” তৈরি হয়েছে।

এদিকে খাদ্য সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় খাদ্য নিতে গিয়ে ২১ জন নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  সাংবাদিক তুহিন হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসের শেষ দিক থেকে — যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) সহায়তা বিতরণ কেন্দ্র চালু করে — খাদ্য সংগ্রহের পথে ১৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন নিহত হয়েছেন জিএইচএফ কেন্দ্রের কাছে এবং ৫১৪ জন খাদ্যবাহী বহরের পথে।

জাতিসংঘ বলছে, নিহতদের বেশিরভাগকে ইসরায়েলি সেনারা হত্যা করেছে, যদিও জিএইচএফ এ সংখ্যা অস্বীকার করেছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।