নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা শনিবার। বিকাল ৩:২৪। ১২ জুলাই, ২০২৫।

গাজায় খাবারের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শিশুরা ইসরায়েলি হামলায় নিহত

জুলাই ১১, ২০২৫ ৩:৪৯
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ক্লিনিকের সামনে পুষ্টিকর সম্পূরক খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আট শিশু ও দুই নারীসহ কমপক্ষে ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে একটি হাসপাতাল জানিয়েছে।

দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন শিশু এবং অন্যান্যদের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে এবং চিকিৎসকরা অন্য কয়েকজনের ক্ষতস্থানের চিকিৎসা করছেন।

এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে ক্লিনিকটি পরিচালনাকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাহায্য সংস্থা প্রজেক্ট হোপ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী “হামাস সন্ত্রাসী”-দের ওপর আঘাত হানার দাবি করেছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে।

বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬৬ জনের মধ্যে রয়েছেন এই শিশুরাও। যদিও যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ইসরায়েল এবং হামাস আলোচনাও চালাচ্ছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতার ও মিসরের সাথে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী হলেও তারা এখনো কোনো অগ্রগতির কাছাকাছি পৌঁছেছে বলে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ  মেকআপ না করলে বেশি খুশি হই : সাদিয়া আয়মান

প্রজেক্ট হোপ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে দেইর আল-বালাহ এলাকায় অবস্থিত তাদের আলতায়ারা স্বাস্থ্য ক্লিনিকের সামনে এই হামলা চালানো হয়। অনেকেই অপুষ্টি, নানা ধরনের সংক্রমণ, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং আরও অনেক সমস্যার চিকিৎসার জন্য বাইরে জড়ো হচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ইউসুফ আল-আইদি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “হঠাৎ আমরা একটি ড্রোনের শব্দ শুনতে পেলাম এবং তারপর বিস্ফোরণ ঘটল। আমাদের পায়ের নিচের মাটি কেঁপে উঠল এবং চারপাশের সবকিছু রক্তাক্ত আর আর্ত-চিৎকারে পরিণত হলো।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি গ্রাফিক ফুটেজ যাচাই করেছে বিবিসি। সেখানে হামলার পরের ঘটনা দেখা গেছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও ছোট শিশুরা রাস্তায় পড়ে আছেন, কয়েকজন গুরুতর আহত এবং অন্যরা নড়াচড়া করছেন না।

জানাজার নামাজ পড়ার আগে পাশের আল-আকসা হাসপাতালের মর্গে শিশুদের মৃতদেহ সাদা কাফন ও বডি ব্যাগে মুড়িয়ে কাঁদছিলেন নিহতদের আত্মীয়রা। একজন নারী বিবিসিকে জানান, নিহতদের মধ্যে তার গর্ভবতী ভাগ্নী মানাল ও তার মেয়ে ফাতিমাও ছিল এবং মানালের ছেলে ছিলেন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে।

আরও পড়ুনঃ  গণতন্ত্র ব্যর্থ, আধুনিক সভ্যতা ভেঙে পড়েছে— ১০০তম জন্মদিনে বললেন মাহাথির

ইন্তিসার বলেন, “ঘটনার সময় তিনি বাচ্চাদের জন্য সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন”। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক নারী বললেন, “কোন পাপের জন্য তাদের হত্যা করা হলো? আমরা পুরো বিশ্বের কান এবং চোখের সামনে মারা যাচ্ছি। পুরো বিশ্ব গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি দেখছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে যদি মানুষ নিহত নাও হয়, সাহায্য আনতে গিয়ে তারা মারা যায়।”

সাহায্য গোষ্ঠীর ক্লিনিকগুলোকে গাজার বাসিন্দাদের জন্য আশ্রয়স্থল বলছেন প্রজেক্ট হোপের সভাপতি এবং সিইও রাবিহ তোরবে। তিনি বলেন, “এসব ক্লিনিকে মানুষ তাদের ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আসে, নারী গর্ভাবস্থা ও প্রসবোত্তর যত্ন নেয়, অপুষ্টির জন্য চিকিৎসাসহ নানা স্বাস্থ্য সহায়তা পায় মানুষ।”

তিনি আরও বলেন, “এরপরও আজ সকালে সহায়তা কেন্দ্রের দরজা খোলার অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরীহ পরিবারগুলোকে নির্মমভাবে আক্রমণ করা হলো। এটা ভয়ঙ্কর এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা। পরিবারগুলোর জন্য কেমন লাগছে তা ঠিকভাবে বলতে পারবো না।”

আরও পড়ুনঃ  ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

রাবিহ তোরবের ভাষায়, “এটি আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এমন ঘটনা স্পষ্টভাবে মনে করিয়ে দেয় যে যুদ্ধবিরতি আলোচনা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও গাজায় কেউ এবং কোনো এলাকা নিরাপদ নয়। এটি চলতে পারে না।”

ইউনিসেফের প্রধান ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, “জীবন রক্ষার জন্য সাহায্য পেতে চেষ্টা করা পরিবারগুলোকে হত্যা অযৌক্তিক।”

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ জানিয়েছে, তারা হামাসের সামরিক শাখার অভিজাত নুখবা বাহিনীর একজন সদস্যকে আঘাত করেছে যে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় অংশ নিয়েছিল।

ওই এলাকার বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তির খবর জানে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী। তারা বলছে, ঘটনাটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং জড়িত না থাকা ব্যক্তিদের যেকোনো ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে আইডিএফ। বিবিসি বাংলা

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।