অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আকাশপথে ত্রাণ ফেলার সময় এক ফিলিস্তিনি নার্সের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই নার্সের নাম ওদাই আল-কুরআন। আকাশপথে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার সময় গত সোমবার তার ওপর ত্রাণের বাক্স পড়লে তিনি প্রাণ হারান।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আই।
অন্যদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ওদাই আল-কুরআন বিমান থেকে ফেলা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু ত্রাণবাহী বাক্স পড়ার সময় তিনি সরে যেতে পারেননি এবং সেটির নিচে চাপা পড়ে মারা যান।
গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষের মধ্যে ইসরায়েলের অনুমতিতে বিভিন্ন দেশ আকাশপথে ত্রাণ পাঠাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই মানবিক সংকটে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮০ জন না খেয়ে মারা গেছেন।
ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজা পুরোপুরি ঘিরে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি অবরোধ আরও কঠোর হওয়ায় জাতিসংঘ পরিস্থিতিকে “দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ রূপ” বলে আখ্যা দিয়েছে।
ওদাইয়ের চাচাতো ভাই মু’তাসিম দ্য ইনডিপেনডেন্টকে বলেন, “সে বিবাহিত, দুই সন্তানের বাবা। গাজার অন্যসব মানুষের মতো গত চার মাস ধরে সে অনাহারে ছিল।”
ইসরায়েল গাজায় স্থলপথে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ায় বিভিন্ন দেশ বাধ্য হয়ে আকাশপথে ত্রাণ পাঠাচ্ছে। তবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই পদ্ধতিকে অকার্যকর বলে সমালোচনা করেছে। কারণ, এতে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছায় না।
এছাড়া আকাশ থেকে ফেলা ত্রাণের বাক্স কখনো কখনো সাধারণ মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। চলাফেরায় অক্ষম বা ধীরগতি সম্পন্ন মানুষজন সময়মতো সরে যেতে না পারায় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে।
এর আগে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে তিন বছর বয়সী সামি মাহমুদ আয়াদ একটি ত্রাণ বাক্সের প্যারাস্যুট বিকল হয়ে তার তাঁবুর ওপর পড়লে সে মারা যায়। এছাড়া ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
জিএইচএফ–এর হয়ে কাজ করা সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ও তথ্য ফাঁসকারী অ্যান্থনি আগুইলার অভিযোগ করেন, তিনি নিজের চোখে দেখেছেন কিভাবে ইসরায়েলি সেনা ও জিএইচএফ–এর ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের হত্যা করেছে।