নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা বৃহস্পতিবার। রাত ৪:০৭। ২৪ জুলাই, ২০২৫।


Girl in a jacket

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দা নদী তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন

জুলাই ২৩, ২০২৫ ৭:৪৩
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা এবং মহানন্দা নদীর ভাঙনে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। পদ্মার ভাঙন থেকে বাঁচতে অনেকেই ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। সদর উপজেলার আলাতুলি, চরআষাড়িয়াদহ, পোল্লাডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্প এলাকা এবং শিবগঞ্জ উপজেলার মনোহরপুর ও পাঁকা ইউনিয়নে পদ্মা নদীর ভাঙনে ফসলি জমি, মসজিদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নে বহু মসজিদ বিলীন হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি কাছাকাছি নদী প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় ভবনটি নদীতে নেমে যেতে পারে বলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নাজির হোসেন জানিয়েছেন। তিনি জানান, নারায়ণপুর ইউনিয়নের ১, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ডের শতাধিক ঘরবাড়ি ফসলি জমি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের গাউনিয়া বাগপাড়া থেকে খলিফার চর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে আরও ৫০০ থেকে ১ হাজার ঘরবাড়ি।

আরও পড়ুনঃ  ‘ক্ষমতা থাকলে বিশ্বকাপ, অলিম্পিকে পাকিস্তান ম্যাচ বাতিল করে দেখাও’

পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা জানান, দেবীপুর, রুস্তম মোড়লপাড়া, খলিফার চর, মনোহরপুর, দোভাগী ঝাইলপাড়া, ফিল্ডবাজার, বাদশাপাড়া, বোনপাড়াসহ এসব এলাকার ঘরবাড়ি প্রতিদিন সরানো হচ্ছে। এ ছাড়া বোদ্দনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণপুর বাতাসমোড় কমিউনিটি ক্লিনিক, বাতাসমোড় হাটবাজার, নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদ, ফিল্ডবাজার, ফিল্ডবাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, ফিল্ডবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দোভাগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর জগনাথপুর মহিলা গার্লস স্কুল, বাদশাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

দুর্লভপুর ইউনিয়নের দোভাগী ঝাইলপাড়া চর এলাকার বাসিন্দা খাদেমুল ইসলাম বলেন, এখানে পাঁচটি গ্রামের প্রায় ২০০ ঘরবাড়ি, বহু মসজিদ, প্রাইমারি স্কুল, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাটবাজার হুমকির মুখে রয়েছে। ইতিমধ্যে বহু স্থাপনা ভেঙে গেছে। ঘরবাড়ি স্থানান্তর করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  চিরনিদ্রায় শায়িত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির

নারায়ণপুর গাউনিয়া বাগপাড়া এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন বলেন, ২০ দিন ধরে পদ্মার ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে করে বহু ঘরবাড়ি পদ্মায় নেমে গেছে। আমার বাড়িও এক মাস পর স্থানান্তর করতে হবে। ইতিমধ্যে অন্য জায়গায় বাড়ি কিনে ফেলেছি। এক মাস পর সেখানে চলে যাব।

শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, পদ্মার পাড়ের বাসিন্দাদের কান্না কোনো সরকার বুঝে না। হামরা চরম বিপদের মধ্যে জীবনযাপন করছি। শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, নাগরিক সেবাসহ সব দিক থেকে আমরা বঞ্চিত। প্রতিবছর আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙনের কারণে স্থানান্তর করতে হচ্ছে।

নারায়ণপুর দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা একরামুল হক আলী জানান, ভাঙনে ঘরবাড়ি শেষ হচ্ছে। কিন্তু ভাঙন রোধে সরকার কিংবা রাষ্ট্র সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আর কয়েক বছরের মধ্যে নারায়ণপুর ইউনিয়নটি পদ্মার গর্ভে চলে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  বিসিএস পরীক্ষা উপলক্ষ্যে আরএমপির গণবিজ্ঞপ্তি

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি লিখিত আবেদন করলে তাঁদের ত্রাণ শাখা থেকে সহযোগিতা করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর বাতাসমোড়, পাকার ঘাট, মনোহরপুর, ঝাইলপাড়া, মল্লিকপাড়া, পোলাডাঙ্গা বিওপি এসব এলাকার ডান তীর-বাঁ তীর মিলে প্রায় ২৫ কিলোমিটার এখন ভাঙনের মুখে। পদ্মায় এখন ২০ দশমিক শূন্য ২১ মিটার পানি রয়েছে। আর বিপৎসীমা ২২ দশমিক শূন্য ৫ মিটার। ইতিমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে পোলাডাঙ্গা বিওপি ও মনোহরপুর এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু হয়েছে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।