স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘‘ঐকমত্য কমিশনসহ দুই-তিনটি দল তাদের মতামত জোর করে বিএনপি ও জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। সে ষড়যন্ত্র পরিহার করে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের সিদ্ধান্ত জনগণকেই নিতে দিন।’’
শনিবার দুপুরে নগরীর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, “যে দলগুলো তাদের দাবি-দাওয়া পূরণ করতে চায়, তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণের মতামত নিতে হবে, জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে। কারও মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”
তিনি বলেন, “যারা নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়, বিলম্বিত করতে চায় বা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়- তাদের বিরুদ্ধে সকল ব্যবসায়ীদেরকেও সোচ্চার হতে হবে।”
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘‘ঐকমত্য হয়েছে, স্বাক্ষরও হয়েছে। এর বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি তোলা হচ্ছে। ঐকমত্য কমিশনের নিজস্ব মতামত আমার আমাদের উপর জনগনের উপর চাপিয়ে দাওয়ার চেষ্টা করা হচ্চে। তবে তাদের কাজ মতামত দেওয়া নয়। এখন যেখান থেকে এসেছেন সেখানে চলে যান। জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’’
তিনি আরও বলেন, “শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেই হবে না, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ন করা জরুরি। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়নের অর্থ হলো- অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মালিকানা যেন মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের হাতে না থেকে জনগণ, শ্রমিক, ভোক্তা, সরবরাহকারী ও বৃহত্তর সম্প্রদায়ের হাতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষও উন্নয়নের অংশীদার হতে পারবে।”
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র মানে জনগণের প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া, রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন নয়। অতীতে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ওপর জুলুম করে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল, কিন্তু জনগণ তার জবাব দিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মেগা প্রকল্পের নামে জনগণের অর্থ অপচয় করবে না।”
বিএনপি নেতা বলেন, “অতীতের অর্থনৈতিক মডেল সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেনি বরং একটি গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘সবার জন্য অর্থনীতি’ চালু করবে, যাতে উন্নয়নের সুফল সবাই পায়।”
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।”
ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃত করে তিনি আরও বলেন, “ফেব্রুয়ারি কেন, পারলে এখনই নির্বাচন দিন- অন্তত আমাদের মুক্তি দিন।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক ও রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মো. লুৎফর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ সুমন, নাটোর চেম্বারের সভাপতি আব্দুল মান্নান, নওগাঁ চেম্বারের সাবেক সভাপতি আলহাজ জাহাঙ্গীর হোসেন, জয়পুরহাট চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমিনুল বারি, হিলি বন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি ফেরদৌস হক এবং সোনামসজিদ স্থলবন্দর গ্রুপের সভাপতি আলহাজ একরামুল হক।

