স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখার শিক্ষার্থীরা এখন থেকে যন্ত্রপাতি ছুঁয়ে দেখেই শিখবে। ছবি নয়, এবার বাস্তব! বইয়ের পাতায় দেখা জটিল মেশিনের নকশা কিংবা শ্রেণিকক্ষে শোনা মোটরের কাজের বর্ণনা-সবই এখন জীবন্ত। আর হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেসব যন্ত্রপাতির ব্যাপারে দক্ষতা অর্জন করবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তাদের জন্য খুলে দেওয়া হলো একটি পূর্ণাঙ্গ কারিগরি ল্যাবরেটরি। শিক্ষাবিষয়ক এই ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে টিআর প্রকল্পের আওতায়। টিআর কর্মসূচি সাধারণত রাস্তাঘাট, সেতু কিংবা কালভার্ট তৈরিতে দেখা যায়। কিন্তু এবার পবা উপজেলায় এই তহবিল ব্যবহৃত হলো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রযুক্তি-ল্যাব গড়তে, যা একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
সকালে ল্যাবটির উদ্বোধন করেন পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ। এ সময় তিনি বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে শুধু বইয়ের জ্ঞান দিয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দরকার হাতে-কলমে দক্ষ একটি প্রজন্ম। সেই লক্ষ্যেই এই কারিগরি ল্যাব। এটিই সারা দেশে টিআর প্রকল্পের আওতায় প্রথম শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ল্যাব, যা পবা থেকেই যাত্রা শুরু করল।’
এই ল্যাব নির্মাণের পেছনে যিনি মূল উদ্যোক্তা, তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা প্রকৌশলী আবু বাশির। তিনি জানান, টিআর প্রকল্পের মূল লক্ষ্য গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ। তবে এবার আমরা নতুনভাবে চিন্তা করেছি—গ্রামের ভিত শক্ত করতে হলে দরকার দক্ষ ও শিক্ষিত জনসম্পদ। তাই এই উদ্যোগ। এটি সরকারের অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার।
ল্যাব পেয়ে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত শিক্ষার্থীরাই। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল হামিদ বলে, ‘আগে শুধু বইয়ে ছবি দেখে বুঝতাম মোটর কীভাবে চলে বা ওয়েল্ডিং কীভাবে হয়। এখন হাতে-কলমে কাজ করতে পারব। এটা আমাদের কর্মজীবনের প্রস্তুতিতে অনেক সহায়তা করবে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর আলী বলেন, ‘ভোকেশনাল শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মমুখী জ্ঞান দেওয়া। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় আমরা সবটা দিতে পারতাম না। এখন এই ল্যাব আমাদের সেই সীমাবদ্ধতা দূর করবে। এটি আমাদের স্কুলের জন্য মাইলফলক।’