অনলাইন ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত থেকে টুঙ্গিপাড়াকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়। শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও কড়াকড়ি আরোপ করে।
সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর ছিলেন। সাধারণ মানুষকেও সমাধিসৌধে যেতে দেওয়া হয়নি। আশপাশ এলাকায় কেউ দাঁড়াতে পারেনি। টুঙ্গিপাড়ার রাস্তাঘাট ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষকে তেমন একটা চলাফেরা করতে দেখা যায়নি। রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা।
শুধু টুঙ্গিপাড়া সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে নয়, গোপালগঞ্জ সদরসহ গোটা জেলাতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। জেলাজুড়ে পুলিশ–এপিবিএনসহ দেড় সহস্রাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।
জেলার স্পর্শকাতর স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। জেলায় যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়।
উপজেলার গওহরডাঙ্গা চৌরঙ্গী মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড, কলেজ সড়ক, বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ সড়ক, বাইপাস সড়কসহ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রবেশের স্থানগুলোতে এপিবিএনের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
বঙ্গবন্ধুর সমাধির মূল প্রবেশগেটসহ অন্য দুটি গেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১ নম্বর গেটের সামনে একটি প্রিজন ভ্যান ও একটি অত্যাধুনিক গাড়ি নিয়ে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করেন। আর ২ নম্বর ও ৩ নম্বর গেটের প্রবেশগেটে পুলিশ মোতায়েন ছিল। তবে সমাধির ৩ নম্বর গেটের পাশে কিছু দোকানপাট খোলা ছিল।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হতো। দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ, শোকসভা ও দোয়া-মিলাদ ছিল নিয়মিত আয়োজনের অংশ। দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধসহ টুঙ্গিপাড়ায় কালো পতাকা উত্তোলন করা হতো। সর্বত্র বিরাজ করত শোকাবহ পরিবেশ। লাখ-লাখ মানুষের জনসমাগম হতো। আর দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন রীতিমতো প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করত।
কিন্তু এ বছরের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ছিল না আগের মতো কোনো আয়োজন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এবার তা আর দেখা যাচ্ছে না। আর নেতা-কর্মীদের আনাগোনাও নেই।
এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় ১৫ আগস্ট উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এখানো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি কিংবা ১৫ আগস্ট পালনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে।-ইত্তেফাক