সাইদ সাজু, তানোর : রাজশাহীর তানোরে গ্রাহকদের ঢালাও ভাবে জরিমানা করা ও ভুতুড়ে বিল (অতিরিক্ত) দেয়ার প্রতিবাদে পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনাল অফিসে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। সটকে পড়ার সময় গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়েন পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রেজাউল করিম খান। খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ গিয়ে গ্রাহকদের শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এঘটনায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। রোববার (২৯জুন) সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ঘটনাটি ঘটেছে পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনাল অফিসের সামনে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তানোর মুন্ডমালা সড়কের ধরে তানোর সদরে অবস্থিত পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনাল অফিসের সামনে ভুতুড়ে বিলের কাগজ নিয়ে শতাধিক গ্রাহক অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভ কারীরা বলছেন, গত মাসের তুলনায় চলতি মাসে দ্বিগুণ, তিনগুন বেশী বিল দেয়া হয়েছে। গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন গত মাসে মিটার সঠিক ছিলো হঠাৎ মিটারে কোন রিডিং দেখা যাচ্ছে না। অফিসে যোগাযোগ করে বিষয়টি কর্মকর্তাদের অবহিত করার পরও মিটারের কোন সমাধান না করে ভুতুড়ে বিল বসিয়ে কাগজ ধরিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক রফিকুল ইসলাম বলেন, গত মাসে আমার বিল আসেছিলো ৬শ’ ৫০ টাকা, এ মাসে ১ হাজার ৮শ’ ৫০ টাকার বিলের কাগজ ধরিয়ে দেয়া হয়েছে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিক বলে জানান তিনি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহার বাড়েনি, অথচ তিনগুণ বেশি বিলের কাগজ ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি অবহিত করতে এসেছিলাম। কিন্তু অফিসের কর্মকর্তারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলছেন। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ‘দুর্নীতিবাজ অফিসার হটাও’ অতিরিক্ত বিল বাতিল করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে অফিস ঘেরাও করেন।
উপস্থিত শতাধিক গ্রাহক একই অভিযোগ তুলে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে ডিজিএম রেজাউল করিম খান তার অফিস কক্ষ থেকে সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে অফিসের উপর তলায় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় উপস্থিত গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়ে আবারো তিনি কক্ষে ঢুকে যান। এসময় গ্রাহকনা তাকে কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে তানোর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আনোয়ার হোসেন সংগীত ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গ্রাহকদের শান্ত করে গ্রাহকদের সাথে নিয়ে ডিজিএম’র কক্ষে গিযে গ্রাহকদের অভিযোগ শুনেন।
গ্রাহকরা বলেন, গত মাসের তুলনায় চলতি মাসে দ্বিগুণ তিনগুণ বেশি বিলেন কাগজ ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু গ্রাহকের বিলের কাগজে ঢালাও ভাবে ১ হাজার ৫শ’ টাকা জরিমানা হিসেবে দেখানো হয়েছে। এসময় উপস্থিত গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিল ও জরিমানার বিষয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে সমস্যার সামাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। তানোর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ গুলো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ তানোর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রেজাউল করিম খান বলেন, গ্রাহকরা আসাসিক মিটারের সংযোগ থেকে বাড়িতে স্থাপন করা (মটর) পানির পাম্প দিয়ে অবৈধ ভাবে
কৃষি জমিতে সেচ দেয়ার প্রমান পাওয়ায় ওই সব গ্রাহককে ১ হাজার ৫শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মিটারে রিডিং দেখা যাচ্ছে না এবং চলতি মাসে গ্রাহকদের অতিরিক্ত বিলের দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারনে মিটারে হয়তোবা রিডিং দেখা যাচ্ছে না। গ্রাহকরা অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে গ্রাহকদের বিল সংশোধন করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।