তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে রাস্তা গুলো (সড়ক) দিযে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুন বেশী ভারী যানবাহন। দ্রুত নষ্ট হচ্ছে (রাস্তা)। দেখার যেন কেউ নেই। বিশেষ করে ১০ চাকার বালু বাহী ড্রাম ট্রাক গুলো দাপটের সাথে বিভিন্ন এলাকার পাকা সড়ক গুলো দিয়ে চলাচল করছে প্রতিনিয়তই। গত কয়েকদিন থেকে গতকাল শুক্রবারও তানোর রাজশাহী ও তানোর মুন্ডমালা সড়ক দিয়ে বালু ও পাথর ভর্তি এসব ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক ছলে আসছে তানোরের বিভিন্ন এলাকায়।
রাজশাহী তানোর সড়কের হাড়দহ বিলের রাস্তা ও তানোর থেকে মুন্ডমালা সড়কের মুন্ডমালা বাজারের প্রবেশ মুখে পাথর বাহী ট্রাক পুতে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফলে, দীর্ঘ সময় চলাচলে ভোগান্তির মুখে পড়েন যানবাহন সহ চলাচল কারীরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়কে এমন দৃশ্য এখন চোখে পড়ছে অহরহ। তবে, অতিরিক্ত ভারি যানবাহন চলাচলের বিষয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে, নির্দ্বিধায় চলাচল করছে ভারী যানবাহন।
সড়ক পাকা হলেই যেকোনো ওজনের যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয় না। অঞ্চল ভেদে সড়কের যানবাহন ধারণ ক্ষমতা ভিন্ন হয়। গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তৈরি সড়কের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৮ টন। উপজেলা এলাকায় ১২ টন। জাতীয় মহাসড়কগুলোতে সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৪০ টন। স্থানীয় মহাসড়কে ২২ টন। সড়ক আইনের এ হিসেব কাগজে থাকলেও সড়কে নেই। প্রতিটি সড়কে ধারণক্ষমতায় কয়েকগুণ বেশি ওজনের যানবাহন চলছে হরহামেশা।
ভরা বর্ষার মৌসুমেও রাজশাহী তানোর সড়ক দিয়ে প্রায় প্রতিদিন বালু ভর্তি এসব ড্রাম ট্রাক চলাচল করছে। তানোর মুন্ডমালা সড়কের লজ্জা তলা নামক স্থানে আমান গ্রুপের কোল্ড স্টোর নির্মান কাজে েসব বালু নিয়ে আনা যাচ্ছে।ফলে, তানোর রাজশাহী সড়কের বাগসারা, মাগধানীসহ হাড়দহ বিলের মাঝের বেশ কয়েকটি স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শক্তি শালী ও বেশি ওজন বহনে সক্ষম এসব ড্রাম ট্রাক চলাচল করলেও ওই সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক সিএনজি ও মটরসাইকেল চালকদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ চলাচলে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় রাস্তাগুলো দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। শহরাঞ্চলের নষ্ট সড়ক সংস্কার হলেও গ্রামে হচ্ছেই না। যে কারণে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই রাস্তা গর্তে পরিণত হচ্ছে। বাড়তি ওজন বহন করার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা । ২০১২ সালের এক্সেল লোড নীতিমালা আইন অনুযায়ী ৬ চাকা বিশিষ্ট মোটরযানের যানবাহন ও মালামালসহ সর্বোচ্চ ওজনসীমা ২২ টন। ১০ চাকা বিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা ৩০ টন এবং ১৪ চাকা বিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা রয়েছে ৪০ টন।
তানোর এলজিইডি’র তথ্য মতে, গ্রাম অঞ্চলে সড়কের ধারণ ক্ষমতা ৮ টন এবং উপজেলা পর্যায়ে সড়কের ধারণ ক্ষমতা ১২ টন পর্যন্ত। অর্থাৎ গ্রাম্য রাস্তায় বাস ট্রাক(৬ চাকা বিশিষ্ট) চলাচলের উপযোগী না। অথচ অধিকাংশ রাস্তায় পণ্যবাহী ট্রাক বিশেষ করে ভাটার মাটিবাহী ট্রাক হরদম চলছে। ফলে গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগ ব্যবস্থার যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তার স্থায়িত্ব লোপ পাচ্ছে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই ভেঙে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা। আইনে শাস্তির বিধান থাকলেও সচরাচর কার্যকর হয় না। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন যে অপরাধ এ তথ্য জানা থাকলেও মানে না অধিকাংশ চালক ও মালিক।
তানোর উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, ১০ চাকার ড্রাম ট্রাকে ৩০ থেকে ৩৫ টনের বেশী ওজন থাকে। এই সড়কে চলাচল করায় রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বেশির ভাগ চালকেরা সহজ পথে চলার চেষ্টা করে। অনেক ছোট রাস্তা দিয়ে ভারি যানচলাচল করে। এগুলো দেখার দায়িত্ব স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের। তিনি বলেন, ভ্যান চলার উপযোগী রাস্তায় ২০ টনের মাটি টানা গাড়ি চলে। যার কারণে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যায়। নতুন রাস্তা করার পরপরই নষ্ট হয়ে যায়।