নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ মঙ্গলবার। রাত ৮:২০। ১৮ নভেম্বর, ২০২৫।

দুর্গাপুরে সরকারি সার পাচারকালে জনতার হাতে আটক ব্যবসায়ী, ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা

নভেম্বর ১৮, ২০২৫ ৭:০৬
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: রাজশাহীর দুর্গাপুরে সরকারি নির্ধারিত মূল্যের ডিএপি সার পাচারের অভিযোগে ২০ বস্তা সারসহ তাহাজ্জাক হোসেন (৪০) নামে এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে স্থানীয় কৃষকরা। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, আটক তাহাজ্জাক মাড়িয়া ইউনিয়নের বিসিআইসি ডিলার নাজিম উদ্দীনের ম্যানেজার। তিনি প্রতিদিনের মতো ওইদিনও গোডাউন থেকে সার বাইরে বের করে বাঘমারা উপজেলার তাহেরপুর বাজারে বেশি দামে বিক্রির জন্য পাচার করছিলেন। কৃষকরা তাকে আটক করে সার জব্দ করে রাখেন। এ সময় ঘটনাস্থলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিনুজ্জামান উপস্থিত হলে ক্ষুব্ধ কৃষকরাও তাকে এক পর্যায়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ডিলারদের মাধ্যমে নিয়মিত সার পাচার ও অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এসব অনিয়মের কারণে কৃষকরা মনোনীত ডিলারের কাছ থেকে সরকারি দামে সার পাচ্ছেন না। বরং বাধ্য হয়ে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দামে সার নিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এতে কৃষিখাতে ব্যয় বৃদ্ধি ও ফসল উৎপাদনে সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলেন, “ডিলার নাজিম আমাদের নিয়মিত সার দেন না। পরে দেখা যায় সেই সার পাশের খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে আমরা সরকারি দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছি। এই সার পাচারে ডিলারের ম্যানেজার তাহাজ্জাক সরাসরি জড়িত।”

আরেক কৃষক আহাদ বলেন, “কিছুদিন আগে ডিলারের কাছে ডিএপি সার নিতে গেলে সে এক বস্তার দাম চেয়েছে ১,৪০০ টাকা। অথচ সরকারি মূল্য ১,০৫০ টাকা। নিয়মিত এভাবে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। তার ডিলারশিপ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।”

অভিযোগ অস্বীকার করে বিসিআইসি ডিলার নাজিম উদ্দীন বলেন, “আটক সার গুলো আমার নয়। কৃষকরা যে অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি নিয়ম অনুযায়ী কৃষকদের সার দিয়ে থাকি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী বলেন, “এর আগেও এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। তখন আমরা ডিলারকে সতর্ক করে ওই ম্যানেজারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম। উপজেলা জুড়ে সার বিতরণ নিয়ে আমাদের নিয়মিত মনিটরিং চলছে। আজকের ঘটনাতেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লায়লা নূর তানজু বলেন, “সার পাচারের ঘটনায় স্থানীয় কৃষকরা একজনকে আটক করেছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আটক ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।”

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।