নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ মঙ্গলবার। রাত ১:০৩। ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫।

দূর্গাপূজার প্রস্তুতি নিয়ে হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫ ১১:১৭
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : আসন্ন দুর্গাপূজায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ। আজ সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিভিন্ন পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সবসময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’

এসময় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা।

হিন্দু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপ বেড়েছে। সারাদেশে পূজা মণ্ডপ প্রস্তুতের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

তাঁরা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সকল পক্ষ থেকে এবারের পূজায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবকে ধন্যবাদ জানান তাঁরা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমে গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন হবে বলে আমরা আশা করছি।

আরও পড়ুনঃ  পূজায় কলকাতায় কাটাবেন জয়া, বললেন— ‘এটা আমার দ্বিতীয় বাড়ি’

এসময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব।

তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এজন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজ খবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এবছরও পূজায় আমরা দু’দিন ছুটি পেয়েছি। এজন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সাথে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সকলে সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক। আপনার বক্তব্য সবসময় আমাদেরকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। কোনো সরকার প্রধানের এত সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ আমরা এই প্রথম দেখলাম।’

আরও পড়ুনঃ  গাজা সিটি মৃত্যুপুরী, জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্রও গুঁড়িয়ে দিল ইসরায়েল

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ্য করেছি, গত এক বছর ধরে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেইক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল মানুষের কল্যাণ হবে আমরা সেটাই কামনা করি।’

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সকল ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে একটি মন্দির করে দেয়া হচ্ছে। আরেকটি মন্দিরে স্নানাগারের জন্য সিড়ি করে দেয়া হচ্ছে। যেসকল অসচ্ছল মন্দির প্যাগোডা, গির্জা রয়েছে তাদেরকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। অসচ্ছল ব্যক্তি বিশেষ করে বিধবা নারীদের জন্য আমরা সহায়তা দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। অনাথ আশ্রমগুলোকেও সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’

আরও পড়ুনঃ  যারা রাস্তা অবরোধ করেছে, তারা কেউ ছাড় পাবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয় সেজন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণাআনন্দ (একক), বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রী শ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি শ্রী বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্না রায় দাস, শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সার্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।-বাসস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।