নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ রবিবার। রাত ২:৪৪। ২৬ অক্টোবর, ২০২৫।

ন্যায়ের পুনর্জাগরণ এখন সময়ের আহ্বান : প্রধান বিচারপতি

অক্টোবর ২৬, ২০২৫ ১২:০৫
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : ন্যায়বিচারের পুনর্জাগরণ এখন আমাদের সময়ের আহ্বান। সংবিধানের স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার যেন দেশের প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়, সেটিই আমাদের দায়িত্ব। দিবসটি উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় আইন বিভাগের সামনে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের গৌরবের ৭২ বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন,আইন কেবল নিয়মের সমষ্টি নয়, এটি জাতির নৈতিক বিবেকের প্রতিফলন। ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র দৃঢ় হয়, আর ন্যায় ব্যর্থ হলে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে। এমন কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, মানবতা যখন অবিচার ও অমানবিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভয়াবহ পরিণতি প্রত্যক্ষ করে, তখনই মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা মানবজাতিকে নতুন এক নৈতিক চেতনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। যখন রাষ্ট্র নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাদের কণ্ঠরোধ করে, তখন ন্যায়ের জন্য লড়াই করা নৈতিকভাবে অপরিহার্য হয়ে পড়ে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান স্মরণ করে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় অসংখ্য প্রাজ্ঞ আইনবিদ তৈরি করেছে। আমি বিশ্বাস করি, এখান থেকে ভবিষ্যতেও এমন আইনজ্ঞ তৈরি হবে, যারা কেবল জ্ঞানে নয়, মানবিকতাতেও আলোকিত হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই যে ৩টি বিভাগ ছিল তার একটি হলো আইন বিভাগ। আইন বিভাগ কাজ করে সমাজ, রাষ্ট্র এবং মানুষকে নিয়ে। অনেক ক্ষেত্রেই মানবিক আচরণ আনপ্রেডিক্টেবল। মানুষ কোন পরিস্থিতিতে কী করে বসেন সেটা সবসময় প্রেডিক্ট করা যায় না। সেজন্য মানুষের আচরণ দ্বারা সম্পৃক্ত সেসব বিষয়কে আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনগুলো তাদের যে রোলগুলো প্লে করার কথা সেগুলো তারা করেনা। আপনাদের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে আরও শক্তিশালী করুন আপনারা। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন হলো দেওয়ার যায়গা, এখানে ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থ সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে, তাই এখান থেকে কারও কিছু পাওয়ার আশা করা যাবে না।

এসময় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্ট বিভাগের ২৯ জন বিচারপতি, দেশের বিভিন্ন জেলার জেলা ও দায়রা জজ, আইনজীবীসহ প্রায় তিন হাজার সাবেক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

দিনব্যাপী এই উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে আগত সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বহু বছর পর একে অপরকে দেখে আবেগে আপ্লুত হন অনেকে। কেউ স্মৃতিচারণায়, কেউ ছবি তোলায়, কেউ বা গান ও আড্ডায় মেতে ওঠেন পুরনো দিনের উচ্ছ্বাসে।

অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার। আয়োজকরা জানান, সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের আইন শিক্ষায় অবদান রেখে চলা এই বিভাগের গৌরবময় পথচলাকে সম্মান জানিয়ে আয়োজন করা হয়েছে এই বৃহৎ পুনর্মিলনী।

তারা আরও বলেন, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে মিলিত হওয়ার এই আয়োজন শুধু স্মৃতিচারণ নয়, বরং ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণাও হয়ে থাকবে। “এই মিলনমেলায় সবার উপস্থিতি আমাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও উৎসাহব্যঞ্জক,” বলেন আয়োজক কমিটির এক সদস্য।

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।