অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারির পরিচালক কিম সাজেটকে বরখাস্ত করেছেন। তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ‘উচ্চমাত্রায় পক্ষপাতদুষ্ট’ হওয়ার অভিযোগ। দেশটির সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠনের যে পরিকল্পনা ট্রাম্প বাস্তবায়ন করছেন, এ পদক্ষেপ সেই ধারাবাহিকতার সর্বশেষ সংযোজন।
ওয়াশিংটনের এই সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত জাদুঘরটি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চিত্রকর্ম সংরক্ষণ করে থাকে। কিন্তু ট্রাম্পের মতে, এটি এখন এমন এক শিল্পজগতের অংশ হয়ে উঠেছে, যা তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিপক্ষদের প্রভাবাধীন এবং তার প্রশাসনের প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণ করে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “অনেক মানুষের অনুরোধ ও সুপারিশের ভিত্তিতে আমি কিম সাজেটকে ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারির পরিচালক পদ থেকে বরখাস্ত করছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘তিনি একজন উচ্চমাত্রায় পক্ষপাতদুষ্ট ব্যক্তি এবং ডিইআই (ডাইভার্সিটি, ইকুইটি অ্যান্ড ইনক্লুজন) এর প্রবল সমর্থক, যে কারণে তার পদে থাকা একেবারেই অনুচিত।’
এই বরখাস্তই স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনকে ঘিরে ট্রাম্পের প্রথম প্রত্যক্ষ পদক্ষেপ। এর আগে তিনি একটি নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ‘বিভেদমূলক বর্ণনা’ ও ‘অ-আমেরিকান মতাদর্শ’ মুছে ফেলার ঘোষণা দেন।
নাইজেরিয়ায় জন্ম নেওয়া, অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে ওঠা এবং বর্তমানে ডাচ নাগরিক কিম সাজেট একজন অভিজ্ঞ প্রতিকৃতি বিশেষজ্ঞ। তিনি ২০১৩ সাল থেকে ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
দুই শতাব্দী আগের প্রতিষ্ঠিত স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন ওয়াশিংটনের এক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, যার অধীনে থাকা ২১টি জাদুঘর মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস ও সংস্কৃতি নিয়েই কাজ করে। ক্যাপিটল থেকে লিংকন মেমোরিয়াল পর্যন্ত বিস্তৃত সবুজ চত্বর ন্যাশনাল মলে এসব জাদুঘর অবস্থিত, এবং এগুলোর প্রবেশ একেবারে বিনা ফিতে। ফলে পর্যটকদের কাছে এগুলো বিশেষ আকর্ষণীয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এলো, যখন তারা হার্ভার্ডসহ একাধিক ‘এলিট’ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মতাদর্শগত লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে। এর আগে ট্রাম্প কেনেডি সেন্টারের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এই শীর্ষস্থানীয় পারফর্মিং আর্টস ভেন্যুকেও নিজের পরিকল্পনার আওতায় আনার পদক্ষেপ নেন।