হেলাল উদ্দিন, বাগমারা : গ্রেপ্তার এড়াতে শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা। তবে শেষ রক্ষা আর হয়নি। সেখানে পুলিশ দেখে ছাদ থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন তিনি। পরে লাফিয়ে আহত হলে গতকাল বুধবার গভীর রাতে তাঁকে ওই অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আমজাদ হোসেন (৪৫)। তিনি উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হকের ‘কাছের লোক’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি তাহেরপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার মৃধার ছোট ভাই।
আমজাদ ছাড়া গতকাল আওয়ামী লীগের আরেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি হলেন তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর কার্তিক চন্দ্র সাহা। তাঁদের বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হামলা চালানোর অভিযোগে মামলা আছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমজাদ হোসেনের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালালে তিনি ভয়ে লাফ দেন। এতে পায়ের গোড়ালিতে আঘাত পান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বছর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর কিছুদিন পালিয়ে ছিলেন আমজাদ। তবে কিছুদিন ধরে তিনি এলাকায় ফিরে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতেন। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঢাকা লকডাউন ঘোষণার পর পুলিশ ধরপাকড় করতে পারে, এমন আশঙ্কায় আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে একই উপজেলার সোনাডাঙ্গা এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নেন। গতকাল রাতের খাবার খেয়ে শ্বশুরবাড়ির একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি একতলা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নেন। পুলিশ বাড়িতে ঢুকে অভিযান শুরু করলে আমজাদ ছাদ থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে নিচে পড়ে তিনি পায়ের গোড়ালিতে আঘাত পান। পুলিশ বিষয়টি টের পেয়ে সেখান থেকে আহত অবস্থায় আমজাদকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি বলেন, আমজাদ ও কার্তিকের বিরুদ্ধে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের দিনে দাঙ্গা–হাঙ্গামার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া যুবদল নেতা মুনছুর রহমানের পায়ে গুলি করার অভিযোগ আছে। তাঁদের এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে তোলা হয়।

