অনলাইন ডেস্ক : আজ প্রিন্সেস অব ওয়েলস ডায়ানা ফ্রান্সিস স্পেনসারের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৭ সালের এই দিনে, ফ্রান্সের প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ৩৬ বছর।
ডায়ানা ছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য, তবে তিনি শুধু রাজবধূ হিসেবে নয়— ব্যক্তিত্ব, ব্যবহার, মানবিকতা ও ফ্যাশন স্টাইলের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। মৃত্যুর এত বছর পরও তাকে ‘স্টাইল আইকন’ এবং ‘জনগণের রাজকুমারী’ হিসেবে স্মরণ করে মানুষ।
ডায়ানা ১৯৮১ সালে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। রাজপরিবারের প্রথা ভেঙে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। চ্যারিটেবল কাজ এবং এইডস রোগীদের পাশে দাঁড়ানোসহ নানা সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন তিনি।
বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই ডায়ানার দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে তাদের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীকালে তিনি একাকী জীবন কাটাতে থাকেন এবং বিতর্কিত সম্পর্ক ও কার্যকলাপে নিয়মিত সংবাদমাধ্যমে উঠে আসেন।
১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট বন্ধু দোদি আল ফায়েদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে, প্যারিসের পন্ত দ্য ল্য-আলমা টানেলে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। দুর্ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ডায়ানা। এ খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে বিশ্বজুড়ে।
তার মৃত্যুর পরে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার তাকে ‘জনগণের রাজকুমারী’ (People’s Princess) উপাধি দেন। ব্রিটেনে কয়েক দশকের মধ্যে এত বড় জনশোক আর কখনও দেখা যায়নি বলে অনেকেই মনে করেন।
ডায়ানার জীবন ও মৃত্যুকে ঘিরে পরবর্তীতে তৈরি হয়েছে সিনেমা, ডকুমেন্টারি ও টেলিভিশন সিরিজ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো Spencer, The Princess এবং The Crown।
লন্ডনের হাইড পার্কে তৈরি করা হয়েছে ‘ডায়ানা ফোয়ারা’, তার স্মরণে স্থায়ী একটি নিদর্শন হিসেবে। তার দুই ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি নিজেদের জীবনেও মায়ের আদর্শ ও প্রভাব ধরে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে।
ডায়ানার মৃত্যু ব্রিটিশ রাজপরিবারে এক গভীর সংকটের সৃষ্টি করেছিল। বিশ্লেষকদের মতে, রাজপরিবারের প্রতি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে ডায়ানার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের দিনে ব্রিটেনসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে প্রিন্সেস ডায়ানাকে স্মরণ করা হচ্ছে নানা আয়োজনে। মৃত্যুর এত বছর পরেও তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা এতটুকুও কমেনি।