অনলাইন ডেস্ক : নেপালের বিপক্ষে প্রথম দেখায় অর্পিতা বিশ্বাস-আলপি আক্তাররা জয় পেয়েছিলেন। ফিরতি দেখাতেও একই ফলের আশা রেখেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী দল। যদিও প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হারের শঙ্কা ছিল না এমনও নয়। ওটা হলেই শিরোপার দৌড় থেকে নাম কাটা যাবে। জিতলে টিকে রইবে শিরোপার আশা। এমন কঠিন সমীকরণের সঙ্গে ছিল ভারতের সঙ্গে গোল ব্যবধান কমিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ। সবকিছু মাথায় রেখেই নেপালের জালে একহালি গোল দিয়েছে মেয়েরা। বাংলাদেশের পক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন সুরভি আকন্দ প্রীতি। একটি গোল করেছেন থুইনুই মারমা। নেপালের হয়ে একটি গোল শোধ দেন অধিনায়ক ভূমিকা।
থিম্পুর চাংলিথিমাং স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রথমার্ধে নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলা উপহার দিতে পারেনি। লিড পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৮ মিনিট পর্যন্ত। ডেডলক ভাঙেন থুইনুই মারমা। ডি-বক্সে ঢুকে নেপালের তিন খেলোয়াড়কে বোকা বানিয়ে কোনাকুনি এক শটে লক্ষভেদ করেন তিনি। বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগমূহূর্তে মামনি চাকমার বাড়ানো বল থেকে বাঁ পায়ে চোখ ধাঁধানো নিখুঁত এক শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন প্রীতি। গোলের আনন্দের রেশ কাটতে না কাটতেই এক গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। রক্ষণভাগের দর্শক ভূমিকায় ফাঁকা বক্সে বল পান নেপালের অধিনায়ক। সেখান থেকে ইয়ারজান বেগমকে পরাস্ত করতে তিনি ভুল করেননি। বিরতির পর কাক্সিক্ষত লক্ষ্যের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে বাংলাদেশ। নেপালের জাল মুখে টানা আক্রমণ শানায়। যদিও ফিনিশিং ব্যর্থতার জেরে প্রতিপক্ষের গোলমুখ থেকে বারবারই বাংলাদেশ হতাশ হয়ে ফিরেছে। ৬৯ মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেছেন পূর্ণিমা মারমা। এর মিনিট দুয়েক পর তার ভুল শুধরে নেন প্রীতি। মামনি চাকমার কর্নার থেকে আলতো টোকায় ব্যবধান ৩-১ করেন। ৮৬ মিনিটে পূর্ণিমা চাকমার ক্রস থেকে ফের প্রীতি গোল করলে তার হ্যাটট্রিক পূর্ণ হয়ে যায়। শেষতক আর কোনো গোল না হলে ৪-১ গোলের জয়ের আনন্দে মাহবুবুর রহমান লিটুর শিষ্যরা মাঠ ছাড়েন।
তিন দিনের ব্যবধানে দুবার নেপালে হারানোর পরেও স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ। যেই বৃত্ত পূরণের আশায় থিম্পুতে মেয়েরা এসেছিল, ভারতের কাছে হেরে সেই পথ অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে। নিজেদের চার ম্যাচে তিনটিতে জিতে ৯ পয়েন্ট পেয়েছে লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা। শিরোপার লড়াই জমিয়ে তুলতে শেষ দুটি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের বিকল্প নেই। কেননা চার দলের টুর্নামেন্ট ডাবল লিগ পদ্ধতিতে হওয়ায় সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর হাতেই উঠবে শিরোপার মুকুট। পয়েন্ট সমান হলে হেড টু হেডের ফল দেখা হবে। এরপরে দেখা হবে গোল ব্যবধান।
টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১০ গোল দেওয়া বাংলাদেশ হজম করেছে চারটি। এ কারণে গোল ব্যবধান +৬। অন্যদিকে টুর্নামেন্টে কোনো গোল হজম না করা ভারত গোল করেছে ২২টি। তাদের গোল ব্যবধান +২২। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ভুটানকে তারা হারিয়েছে ৫-০ ব্যবধানে। ফলে বাংলাদেশের সমান ম্যাচ খেলে তাদের সংগ্রহ ১২ পয়েন্ট। পরের দুই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতলে পয়েন্ট হবে ১৫। ভারত যদি বাংলাদেশের কাছে হারে এবং নেপালের বিপক্ষে জিতে তা হলে গোল ব্যবধানে প্রতিবেশীদের ঘরেই শিরোপা যাওয়ার কথা। কিন্তু এবারে টুর্নামেন্টের নিয়মে বদল এসেছে। শেষ ম্যাচটি যদি শীর্ষ দুদল খেলে এবং পয়েন্ট সমান হয়ে যায়, তা হলে গোল ব্যবধান বিবেচনায় নেওয়া হবে না। সে ক্ষেত্রে ম্যাচ চলে যাবে সরাসরি টাইব্রেকারে। এই হিসাবে টুর্নামেন্টের গ্রুপপর্বের শেষ দিনে ভারত ও বাংলাদেশের লড়াইটি হবে অলিখিত ফাইনাল।