হেলাল উদ্দীন, বাগমারা : ফুটবল, ভরপুর বিনোদনের এক অনন্য মাধ্যম। ফুটবল খেলা ভালোবাসেন না এমন দর্শকের জুড়ি মেলা ভার।
জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনূর্ধ্ব ১৯ বালিকা ফুটবল দলের ফাইনাল খেলা গত ১৯ তারিখ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে। ফাইনাল খেলায় অংশগ্রহণ করে ময়মনসিংহ বিভাগীয় দলকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে রাজশাহী বিভাগীয় দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত এই খেলায় পুরস্কার বিতরণ করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া।
সেই খেলায় অসামান্য কৃতিত্ব ও নৈপূরণের সাথে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে প্রশংসায় ভাঁসছেন বাগমারার কৃতি সন্তান ফরিদা পারভীন। তিনি মাননীয় উপদেষ্টার কাছ থেকে চ্যাম্পিয়ন দলের হয়ে ট্রফি ও গোল্ড মেডেল গ্রহণ করেন।
ফরিদা পারভীনের বাসা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের পার মচমইল গ্রামে। ছোট বেলা থেকেই ফরিদা পারভীনের ফুটবলের প্রতি আসক্তি ছিল। ক্লাস ফাইভে থাকাকালীন সময়ে সে অসাধারণ খেলার কারণে তার শ্রেণী শিক্ষকেরা তাকে খেলাধুলার প্রতি অনুপ্রাণিত করেন এবং কঠোর মনোনিবেশ করতে পরামর্শ দেন।
সেখান থেকেই শুরু ফরিদার অক্লান্ত পরিশ্রম আর স্বপ্নের পূরণের সূচনা। বিভিন্ন ক্লাব পর্যায়ে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। খেলাধুলায় অসাধারণ অবদানের জন্য সবমিলিয়ে তার পুরস্কারের সংখ্যা শতাধিক পেরিয়ে গেছে।
তবে তার এই খেলাধুলার জীবন মোটেও সুখকর ছিল না। পরিবারের সাপোর্ট পেলেও প্রতিবেশীদের কানাঘুষা এবং কটু কথার সম্মুখীন হতে হয়েছে ফরিদা পারভীনের। কিন্তু তাতেও দমে থাকেননি ফরিদা পারভীন, তার লক্ষ্যে অবিচল থেকে ছুটে চলেছেন অদম্য স্বপ্ন পূরণের আশায়।
তার এই অদম্য প্রতিভা তার স্বপ্ন পূরণের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার শুভ সূচনা করে দিয়েছে “জাতীয় গোলকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪”। সে তার প্রতিভার দ্বারা রাজশাহী বিভাগীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে দিয়েছে।
তিন বোনের মধ্যে ফরিদা পারভীন সবার ছোট। বাবা মজিবর রহমান ও মা গয়না বিবির সর্বকনিষ্ঠ মেয়ে ফরিদা পারভীন। সংসারে কর্মক্ষম বলতে শুধু তার বাবা। তাদের কোন জমিজমা নেই, বাবা পরের জমিতে কাজ করেন এবং কামলা দেন। কাজ থেকে ফিরে বিকেলে আবার চায়ের দোকানে চা বিক্রি করতে যান ফরিদার বাবা।
এভাবে কোনমতে সংসার চলে ফরিদার। সামান্য একটু জমিতে ঘর করেছেন মাথা লুকানোর জন্য, সেটিও আবার ঋণ করে এবং ফরিদার খেলাধুলা থেকে সামান্য আয় রোজগার দিয়ে। ফরিদার আশা তাকে তার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিতে সবাই যেন তাকে সহযোগিতা করেন। তার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে জাতীয় দলের হয়ে খেলা। সেজন্য তার ভক্ত শ্রোতাদের কাছে অনুরোধ তাকে যেন সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।