নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ মঙ্গলবার। রাত ৪:১২। ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫।

ফের অবরোধের ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছাড়ল বিক্ষোভকারীরা

সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫ ৮:০৮
Link Copied!

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুর-৪ আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তৃতীয় দফার লাগাতার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙ্গা পৌরসভা ও আশপাশের এলাকা। দিনভর বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে উত্তাল ছিল পুরো এলাকা।
ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে থানা, উপজেলা পরিষদ ও কর্মকর্তাদের অফিসে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা।

এদিকে আন্দোলনকারীরা আগামীকাল মঙ্গলবারও (১৬ সেপ্টেম্বর) সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়ে সড়ক ছেড়ে দিয়েছে। এরপর থেকে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে থাকে।

এর আগে সকাল থেকে অবরোধ চললেও দুপুরের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা। উত্তেজিত জনতা প্রথমে পুলিশকে ধাওয়া দিয়ে ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মসজিদের ভেতর আশ্রয় নিতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে মসজিদে হামলা চালায় তারা।

আরও পড়ুনঃ  বাগমারায় কৃষকদল নেতা লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

এরপর একে একে বিক্ষোভকারীরা ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে থানা এবং উপজেলা পরিষদে হামলা চালায়। এসময় ভাঙ্গা থানায় ৪টি পিকআপ ভ্যান, একাধিক মোটরসাইকেল, ফার্নিচার, কম্পিউটারসহ ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। হাইওয়ে থানায় ৩টি পিকআপ ভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, রেকার ট্রাক, ডিআইজির পাজেরো গাড়ি, ৮টির বেশি মোটরসাইকেল, কম্পিউটার ও প্রিন্টার মেশিনসহ সবকিছু গুঁড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, নির্বাচন অফিস, এলজিইডি অফিস, হলরুম, অফিসার্স ক্লাবসহ পুরো উপজেলা পরিষদ ভবন ভাঙচুর করা হয়। বিক্ষোভকারীরা ৪/৫টি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলা তাণ্ডবে ভাঙ্গার সরকারি অফিসগুলো কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকিবুজ্জামান বলেন, দুপুরে খাবারের সময় হঠাৎ কয়েক হাজার লোক লাঠি-সোঁটা নিয়ে থানায় ঢুকে পড়ে। তারা থানার সব গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে, এমনকি একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয়। আমরা কিছুই করতে পারিনি, শুধু দেখেছি।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে ফেনসিডিলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

তাণ্ডব চলাকালীন এবং পরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে অবস্থান করেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা উপজেলা প্রশাসনের অন্য কোনো প্রতিনিধির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ভাঙ্গা লোকাল থানার পক্ষ থেকে বিভিন্ন নিরাপত্তাজনিত কারণে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

তাণ্ডবের সময় বিক্ষোভকারীরা ছবি ও ভিডিও ধারণ করায় একাধিক সাংবাদিককে মারধর করে। এর মধ্যে দুইটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক আহত হয়েছেন, একজনের হাতে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুনঃ  ক্যাম্পাসে সহিংসতা : ৫ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ফেরত পাঠাচ্ছে ভারত

এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসনের আওতাভুক্ত আলগী ও হামেরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গাবাসী সড়ক অবরোধ করে। সেসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান তিন দিনের সময় নিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে দ্বিতীয়বারের মতো অবরোধ শুরু হয়, যা রোববার থেকে তৃতীয় দফায় রূপ নেয়।

এদিকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে আলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মম ছিদ্দিক মিয়া ও হামেরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোকন মাতুব্বরসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা করে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে পুলিশের প্রতি ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।