বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রামে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর করতে নিজেরা অর্থ চাঁদা তুলে ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাঁচা রাস্তার সংস্কার কাজ করছেন একটি গ্রামের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার ও বুধবার লক্ষ্মীপুর গ্রামের তরুণরা এ কাজ করেন।
উপজেলার বড়াইগ্রাম সদর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার মাস্টারের বাড়ি থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত একটি কাঁচা রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরা ছিল। দুই পাশ পাকা হলেও মাঝখানের প্রায় ২০০ মিটার রাস্তা ছিল কাঁচা। এই রাস্তা দিয়েই লক্ষ্মীপুর, উপলশহর, নিশ্চিন্তপুর ও খিদিরপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ উপজেলা সদর, হাসপাতাল, থানা ও হাট-বাজারে যাতায়াত করেন। এছাড়া স্কুল-কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন চলাচলের প্রধান মাধ্যম এই রাস্তাটি। তবে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে অসুস্থদের হাসপাতালে নেওয়া কিংবা কৃষিপণ্য বাজারে পৌঁছানো হয়ে ওঠে দুরূহ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কারের কোনো সরকারি উদ্যোগ না থাকায় বাধ্য হয়েই গ্রামের উদ্যমী যুবকরা নিজেরা চাঁদা তুলে কাজ শুরু করেন। তারা স্থানীয়ভাবে মাটি, বালু ও ইট কিনে রাস্তায় ফেলছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ৪০-৫০ জন তরুণ নিজ হাতে রাস্তার কাজ করছেন। কেউ মাটি কাটছেন, কেউ মাথায় করে মাটি বহন করছেন, কেউ ইট ভাঙছেন, আবার কেউবা বালু ও ইট বিছিয়ে চলেছেন। রাস্তার পাশে রান্না হচ্ছে খিচুড়ি—যুবক ও বয়োজ্যেষ্ঠদের জন্য ভাতের ব্যবস্থা।
লক্ষ্মীপুরপুর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন ও আব্দুল বারেক বলেন, “গ্রামের কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নেওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। হাটবাজারে যাতায়াতেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বহু বছর ধরে রাস্তা পড়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। তাই আমরা নিজেরাই টাকা তুলে কাজ করছি।”
বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মমিন আলী জানান, রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামবাসী যেভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন, তা দেখে আমি অভিভূত। ভবিষ্যতে এ রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।-ইত্তেফাক