নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঢাকা মঙ্গলবার। রাত ৩:১০। ১ জুলাই, ২০২৫।

বায়ুদূষণ রোধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

জুন ৩০, ২০২৫ ৮:২৮
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক : সরকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক সক্রিয় ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। যার মধ্যে ঢাকায় ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সায়েদা রিজওয়ানা হাসান।

সোমবার সচিবালয়ে চীনা বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।

রিজওয়ানা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট (বিক্যাপ)-এর আওতায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শীত মৌসুম শুরুর আগেই ঢাকার সব ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে সংস্কারকাজ শেষ করার লক্ষ্যে কাজ চলছে। ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে রাস্তার পৃষ্ঠ ঢেকে রাখা, ঘের বা বেড়া স্থাপন এবং পানি ছিটানোর গাড়ি ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে।

রাস্তার পৃষ্ঠ ঢেকে রাখা বলতে বোঝায়, যেসব স্থানে সংস্কার চলছে, সেখানে কাপড়, পলিথিন বা অন্য কোনো ঢাকনা দিয়ে রাস্তার সেই অংশ ঢেকে দেওয়া, যাতে ধুলাবালি বাতাসে না উড়ে। এতে করে আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার থাকে এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমে।

আরও পড়ুনঃ  ‘যারা পিআর পদ্ধতি চাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য নির্বাচন বানচাল করা’

উপদেষ্টা আরো জানান, বাড়তি উদ্যোগ হিসেবে পানি ছিটানোর গাড়ি চালু, জমি শক্তকরণ এবং উন্মুক্ত স্থানে ‘জিরো সয়েল’ নীতি কার্যকর করা হবে যাতে ধুলাবালি ছড়াতে না পারে।

যানবাহনের ধোঁয়া ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। এই দূষণ কমাতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পুরোনো যানবাহন অপসারণ করবে এবং ২৫০টি নতুন যানবাহন চালু করবে বলেও জানান উপদেষ্টা।

তিনি আরো জানান, ধোঁয়ার নির্গমন মান কঠোরভাবে মানতে বাধ্য করতে ১০টি স্বয়ংক্রিয় যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নির্ধারণে চীনা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে বলে জানান রিজওয়ানা।

তিনি আরো জানান, সঠিক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ টেকসই নীতিনির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উপদেষ্টা জানান, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে, আধুনিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন, বৈশ্বিক মান অনুসারে নির্গমন মান উন্নয়ন, স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও বর্জ্য দহন কেন্দ্র চালু করা এবং পরিচ্ছন্ন রান্নার জন্য এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া।

আরও পড়ুনঃ  ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের পর ‘শান্তি চুক্তি সম্প্রসারণের’ সুযোগ দেখছেন নেতানিয়াহু

স্যানিটারি ল্যান্ডফিল হলো এমনভাবে ময়লা-আবর্জনা মাটির নিচে ফেলা, যাতে পরিবেশ দূষণ না হয় এবং পানি বা বায়ুর মান খারাপ না হয়।

তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও উদ্যোগে কর প্রণোদনার বিষয়টিও সরকার পর্যালোচনা করছে। বিক্যাপ প্রকল্পের আওতায় পরিবেশ অধিদফতর (ডিওই) উচ্চমাত্রায় দূষণকারী শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন নির্গমন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করবে। পাশাপাশি দেশজুড়ে প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা হবে।

এদিকে, পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা উৎসাহিত করতে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সড়কে বেড়া স্থাপন করবে এবং পরিবেশবান্ধব ৫০টি বৈদ্যুতিক যান চালু করবে।

তিনি জানান, জাপানের অর্থায়নে বায়ুর গুণগত মান সরাসরি পরিমাপে আটটি বাস্তবভিত্তিক বায়ু গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে করে সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নীতিনির্ধারণ সহজ হবে। এই উদ্যোগকে সহায়তার জন্য ‘বেস্ট’ প্রকল্পও চালু করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  কর্ণফুলী পেপার মিলের কাগজ উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে সরকার : শিল্প উপদেষ্টা

চীনা বিশেষজ্ঞ দলের সহযোগিতায় বায়ুদূষণ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা অনেক বাড়বে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন রিজওয়ানা হাসান। তিনি দেশবাসীর জন্য একটি পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, চীনের নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনুষদের নির্বাহী ডিন অধ্যাপক ইউ ঝাও, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানজিং-হেলসিঙ্কি ইনস্টিটিউট ইন অ্যাটমোসফেরিক অ্যান্ড আর্থ সিস্টেম সায়েন্সেসের উপ-ডিন ড. হাইকুন ওয়াং এবং স্কুল অব অ্যাটমোসফেরিক সায়েন্সেসের সহযোগী অধ্যাপক ড. তেংইউ লিউ।-বাসস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।