নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাংলাদেশ শুক্রবার। সকাল ১১:০৫। ২৮ নভেম্বর, ২০২৫।

বিএনপি নির্বাচিত হলে চরবাসীর উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে : মিলন

নভেম্বর ২৭, ২০২৫ ১০:৩৫
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি হচ্ছে জনগণের দল—এ মন্তব্য করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং পবা-মোহনপুর আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট শফিকুল হক মিলন।

তিনি বলেন, বিএনপি যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে তখন দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়। আর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থাকলে দেশের সামগ্রিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে—বর্তমান সময়ে চর অঞ্চলের অবস্থা তারই বাস্তব উদাহরণ। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনসচেতনতা তৈরির অংশ হিসেবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন কেন্দ্রের কর্মীসভায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে পবার পদ্মা চরের হরিয়ান ইউনিয়নের অন্তর্গত ৯নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে চর তারানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মিলন।

তিনি স্মৃতিচারণ করে জানান, বিএনপি সরকার অতীতে ক্ষমতায় থাকাকালীন চরমাঝার দিয়াড়, চরখিদিরপুর, চর খানপুর ও চর তারানগর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছিল। ভূমিহীনদের বাসস্থানের ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, স্বাস্থ্যসেবায় চর অঞ্চলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ, চরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষ উদ্যোগ—সবই বিএনপির উন্নয়ন দর্শনের অংশ ছিল। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন থেকে শুরু করে নারীর ক্ষমতায়নেও ছিল সুস্পষ্ট কাজের ধারাবাহিকতা। কিন্তু পতিত সরকারের শাসনামলে চরবাসীর ভাগ্যোন্নয়নে কোনো বাস্তব কাজ হয়নি। কারণ—চরের প্রায় ৯৮ ভাগ মানুষ আজীবন ধানের শীষের প্রতি আস্থাশীল, তারা ধারাবাহিকভাবে বিএনপিকে ভোট দিয়ে আসছেন।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য নিজ দেশ থেকে টেন্ডারে চাল কিনছে পাকিস্তান

মিলন বলেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হলে চর অঞ্চলের জন্য বিশেষ বাজেট বরাদ্দ করা হবে। চরবাসীর চলাচলের জন্য টেকসই রাস্তাঘাট নির্মাণ, নতুন হাইস্কুল স্থাপন, বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং রাজশাহী শহরের সঙ্গে চর অঞ্চলের যাতায়াতে বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করা হবে। পাশাপাশি চর এলাকায় বসবাসকারী শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং দীর্ঘদিনের জমির রেকর্ড, খরিজ ও সরকারি খাজনার জটিলতা দূর করে সুষ্ঠু নিয়ম চালু করা হবে।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে পতিত সরকার যেভাবে ক্ষমতায় এসেছিল, দেশবাসী তা দেখেছে। ২০১৪, ২০১৮ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনেও তারা দিনের ভোট রাতে করে, সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ব্যালটে সিল মেরে, ব্যালট বাক্স লুট করে ক্ষমতা দখল করেছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনাদলগুলো অংশ না নিলেও খুনি হাসিনার চাচাতো ভাইয়ের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিকে পাশে নিয়ে এক প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থী ছিল অনেক, কিন্তু ভোটার ছিল একজন—ফ্যাসিস্ট হাসিনা।

চরবাসীকে প্রকৃত যোদ্ধা উল্লেখ করে মিলন বলেন, তারা প্রতিনিয়ত নদীভাঙন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও প্রতিবেশী দেশের শত্রুভাবাপন্ন আচরণের বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে আছেন। অথচ পতিত সরকারের সময় চরের মানুষ ঘরে ঘুমাতে পারেনি—প্রতিনিয়ত পুলিশি হয়রানি, জেল-জুলুম, ডাকাতি, নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  রাজশাহীতে কোটি টাকার হেরোইনসহ গ্রেফতার ১

বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি অবিচার তুলে ধরে মিলন বলেন, তিনি দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে নিজের স্বামী, সন্তান এবং ব্যক্তিগত সবকিছু হারিয়েছেন। মিথ্যা মামলায় সোয়া ছয় বছর কারাবন্দি ছিলেন। ময়েনউদ্দিন–ফখরুদ্দীন সরকারের সময় দুই সন্তান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়—নির্যাতনের সেই ভয়াবহতা ফোনে শুনতে বাধ্য করা হয়েছিল বেগম জিয়াকে। এত কিছুর পরও তিনি দেশ ত্যাগ করেননি। দুই ছেলে বিদেশে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গেলেও কোকো সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। তারেক রহমান আজও দেশে ফিরতে পারছেন না। বর্তমানে বেগম জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন।

অপরদিকে শেখ হাসিনা বারবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন উল্লেখ করে মিলন বলেন, তিনি কখনো জনগণের কথা ভাবেননি—ভেবেছেন শুধু নিজের ও আত্মীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গনআন্দোলনের সময়ও প্রাণের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বিদেশে বসেও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন জামায়াতে ইসলামের বেইমান চক্রকে সঙ্গে নিয়ে।

তিনি বলেন, জামায়াত এ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মোনাফেকী করেছে। ১৯৪৭ সালে ভারতের পক্ষে ছিল; ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, নির্যাতন, মা-বোনদের ধরিয়ে দেওয়া, হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে কাজ করা—এমন কোনো অপরাধ নেই যা তারা করেনি।

আরও পড়ুনঃ  ভূমিকম্পের ঘটনায় আতঙ্কিত নয়, সচেতন হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের- প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

১৯৮৬ সালে শেখ হাসিনা ও জামায়াতের প্রয়াত আমির গোলাম আজম বলেছিলেন—এরশাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সে জাতীয় বেইমান ও মোনাফেক। আজ সেই আওয়ামী লীগ ও জামায়াতই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের মূল চক্র।

মিলন বলেন, জামায়াত আবারও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে—দাড়িপাল্লায় ভোট দিলে জান্নাত নিশ্চিত, নামাজ-কোরআনে লাভ নেই, কবরের ফেরেশতা নাকি ভোট জিজ্ঞেস করবে—এ ধরনের শিরকী বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি বলেন, এরা প্রকৃত মুসলমান কিনা সন্দেহ। সম্প্রতি তারা নাকি ‘জামায়াতে ইসলাম হিন্দু শাখা’ পর্যন্ত খুলেছে। এরা কোন বেহেশতে যাবে—প্রশ্ন রাখেন তিনি। যেকোনো বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য এড়িয়ে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান মিলন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রজত আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি পবা উপজেলা শাখার সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ, হরিয়ান ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ মুজিবুর রহমান, সদস্য সচিব বাদশা মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিব, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আব্দুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান বাবু, আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম, কমেলা হক কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুহসিন আলী, রাজশাহী মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজির হাসান, জেলা যুবদলের সদস্য ফরিদুল ইসলাম সাহেব এবং নওহাটা পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহেল রহমানসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল সময়ের কথা ২৪ লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন somoyerkotha24news@gmail.com ঠিকানায়।