ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) সংসদীয় আসনের অধীন ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে জুড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
নতুন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার থেকে টানা তিন দিন সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ভাঙ্গা উপজেলায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে।
এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচিও রয়েছে আন্দোলনকারীদের। শেষ পর্যন্ত তাঁদের দাবি মানা না হলে সব রাজনৈতিক দল মিলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হতে পারে বলেও হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
শনিবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে আলগী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ওই সব কর্মসূচি ঘোষণা করেন আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার দুটি ইউনিয়ন ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কেটে ফরিদপুর–২ আসনে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও মিছিল। শনিবার ভাঙ্গা বাজারসংলগ্ন ঈদগাহের সামনে
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন অযৌক্তিকভাবে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে না আনলে ভাঙ্গা উপজেলার ১২ ইউনিয়নের মানুষ নির্বাচন কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবেন। প্রয়োজন হলে রক্ত দিয়ে হলেও পূর্বের অবস্থান রক্ষা করা হবে। সেই সঙ্গে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন নেতারা।
১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে ভাঙ্গা উপজেলা। এ উপজেলা নিয়ে আগে একটি সংসদীয় আসন ছিল, তখন ফরিদপুরে মোট সংসদীয় আসন ছিল পাঁচটি। তবে ২০০৮ সালে ফরিদপুরের সংসদীয় আসনের সংখ্যা কমিয়ে চারটি করা হয়। ওই সময় ভাঙ্গার সঙ্গে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা জুড়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত গেজেটে দেখা যায়, ভাঙ্গার দুটি ইউনিয়ন আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কার মদদে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা খুঁজে বের করার দাবি জানানো হয়। টানা তিন দিন সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক বলেন, ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে ১২ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ কর্মসূচি ভাঙ্গা পৌর শহরের হাসপাতাল গেট থেকে রেললাইন, পুলিয়া বাসস্ট্যান্ড, হামিরদী ইউনিয়নের পুকুরিয়া রেলক্রসিং, পুকুরিয়া বাসস্ট্যান্ড, মনসুরাবাদ বাসস্ট্যান্ড, হামিরদী বাসস্ট্যান্ড ও মাধবপুর বাসস্ট্যান্ড এবং আলগী ইউনিয়নের সুয়াদি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হবে। পর্যায়ক্রমে কর্মসূচি কঠিন থেকে কঠোরতম হবে। দাবি মেনে নেওয়া না হলে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও এবং সর্বোপরি ভাঙার সব রাজনৈতিক দল মিলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বর্জন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ভাঙা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. খোকন মিয়া, উপজেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব মোল্লা, পৌর বিএনপি সদস্য মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মেজর (অব.) জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আমির সরোয়ার হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের উপজেলা সেক্রেটারি আতিয়ার রহমান, খেলাফত মজলিসের মুফতি জামির হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।