অনলাইন ডেস্ক : পাকিস্তান সরকার আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং ভারতের পক্ষ থেকে সিন্ধু পানি চুক্তিসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্থগিত করার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল আজ শনিবার (২৪ মে) এ তথ্য জানিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল, আগামী ২ জুন বাজেট পেশ করা হবে। তবে গতকাল জানানো হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ১০ জুন পেশ করা হবে। এর কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেছেন, এটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কোনো চাপ নয়। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের আসন্ন সফর ও ঈদুল আজহার ছুটির জন্য এটি পিছিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ঈদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর সংসদীয় বৈঠক সহজে করার জন্যই বাজেট পেছানো হয়েছে।’
আহসান ইকবাল জানান, সরকার জনগণের ওপর চাপ কমাতে চায়। তবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হলো সশস্ত্র বাহিনীকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া, যাতে তারা দেশের সুরক্ষায় নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে পারে।’ তিনি ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এটা প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদের একজন বিপজ্জনক প্রতিবেশী (ভারত) আছে, যারা রাতের আঁধারে আমাদের আক্রমণ করেছিল। কিন্তু আমরা তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি তারা আবার আক্রমণ করে জবাব দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী আহসান ইকবাল পাকিস্তানের পানি নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, তারা দ্রুতগতিতে ডায়ামার-ভাসা ও মোহমান্দ বাঁধসহ অন্য প্রকল্পগুলো শেষ করতে চান। তিনি জানান, কৃষিক্ষেত্রে দ্বিতীয় সবুজ বিপ্লব ঘটাতে প্রধানমন্ত্রী এক হাজারেরও বেশি কৃষি প্রকৌশলীকে প্রশিক্ষণের জন্য চীনে পাঠিয়েছেন। এর মাধ্যমে নিজস্ব বীজ তৈরি এবং ডেইরি ও পশুপালন খাতকে আধুনিক করার লক্ষ্য রয়েছে।
জঙ্গলের দেশে ফিল্ড মার্শাল নয়, রাজাই মানায়: আসিম মুনিরকে ইমরান খানজঙ্গলের দেশে ফিল্ড মার্শাল নয়, রাজাই মানায়: আসিম মুনিরকে ইমরান খান
বাজেটে প্রকৌশলীদের জন্য ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থাও থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে মন্ত্রী জানান, দেশের উন্নয়ন বাজেট মাত্র এক ট্রিলিয়ন রুপি হবে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আহসান ইকবাল সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যের ওপর জোর দেন। তিনি ইমরান খান এবং তাঁর দল পিটিআইয়ের সমালোচনা করে বলেন, জাতীয় সংহতির এই সময়ে ইমরান খান ব্যক্তিগত প্রতিশোধের কথা ভাবছেন। তিনি বলেন, ‘যখন পুরো জাতি সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে, তখন ইমরান খানের মন্তব্যগুলো জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক এক্স পোস্টে ইমরান খান বলেছেন, ‘দেশ এখন জঙ্গলের আইনে শাসিত হচ্ছে। জঙ্গলে রাজাই মানায়, ফিল্ড মার্শাল নয়।’ কারাগারে বন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) আদিয়ালা কারাগারে আইনজীবী, সাংবাদিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপরই বিষয়টি নজরে আসে।
ইমরান খান সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘মাশা আল্লাহ, জেনারেল আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল করা হয়েছে। সত্যি বলতে, তার জন্য রাজা উপাধি বেশি মানানসই হতো। কারণ, এখন দেশ জঙ্গলের আইন দ্বারা শাসিত হচ্ছে। আর সেই জঙ্গলে একটাই রাজা থাকে।’